বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২৬ জনের ‘সম্পৃক্ততা’ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা। এছাড়া এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সময়ের প্রক্টর, পুলিশের দুই সদস্য এবং ছাত্রলীগের এক নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো চারজন হলেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সময়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম। যারা সাঈদকে সরাসরি গুলি করেছিল তাদের মধ্যে পুলিশের দুই সদস্য এসআই আমির হোসেন এবং কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ওই সময়ের সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী আকাশ। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল সকাল ১০টায় এই চারজনকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বেলা পৌনে ১২টায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের উপর শুনানি হয়। প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মিজানুল ইসলাম শুনানি করেন। শুনানিতে মিজানুল ইসলাম বলেন, আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল কাস্টডিতে পাঠানোর আবেদন করছি।
তদন্ত কর্মকর্তা ‘কাজ শেষ করে এনেছেন’ জানিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ২৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছেন। তদন্ত শেষ করতে আরো দুই মাস সময় চাই। ট্রাইব্যুনাল ১৫ জুন পর্যন্ত সময় দিয়ে চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে সংবাদ সম্মেলনে মিজানুল ইসলাম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন আসামি করা হয়নি প্রশ্নের জবাবে বলেন, তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার আবু সাঈদ হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ৫ অগাস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর আবু সাঈদের পরিবার আরেকটি মামলা করে। যদি ওই মামলার সকল আসামি তদন্তে এই মামলার আসামি হন তাহলে ওই মামলা চলবে না। শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশেই অনেক ঘটনা ঘটেছে। ২৬ জনের যে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে সেখানে শেখ হাসিনার নাম আছে কি নাই সেটা তো আমরা বলিনি। আর একটি ঘটনায় একাধিক মামলা হতেও ট্রাইব্যুনাল আইনে বাধা নাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ।