২৪টির পরিবর্তে ১৮ পদে নির্বাচন হবে চট্টগ্রাম চেম্বারে

আজ ভোটার নবায়নের সময় শেষ

হাসান আকবর | সোমবার , ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

শতবর্ষী প্রাচীন বাণিজ্য সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের এবারের নির্বাচনে ২৪টির পরিবর্তে ১৮টি পদেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। টাউন এসোসিয়েশন এবং ট্রেড গ্রুপের ৮টি সংগঠনকে অকার্যকর ঘোষণা করায় ওই সংগঠনগুলো থেকে ছয়টি পদে ভোটে লড়ার সুযোগ থাকছে না। একইসাথে পরিচালকদের ভোটেই নয়, এবার সাধারণ ভোটারদের ভোটেই সরাসরি প্রেসিডিয়াম নির্বাচিত হবে। চট্টগ্রাম চেম্বারের ভোটে ব্যাপক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ থেকে উপরোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অপরদিকে চেম্বারের অতীত দুইটি বোর্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ১২জন এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠাতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ ভোটার নবায়নের সময় শেষ হচ্ছে।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রেসিডিয়াম এবং পরিচালকমন্ডলীর নির্বাচন আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা কত হবে তা আজ বিকেল ৫টার পর জানা যাবে। চেম্বারের সদস্য সংখ্যা ১৩ হাজারের মতো হলেও গতকাল বিকেল পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো সদস্য নিজেদের পদ নবায়ন করে আগামী নির্বাচনের ভোটাধিকার অর্জন করেছেন। অবশ্য ইতোমধ্যে যাছাই বাছাইকালে হাজার খানেক সদস্যের সদস্যপদ নবায়ন করা হয়নি। তাদেরকে ভুয়া ভোটার হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।

চেম্বারের নির্বাচনে অতীতে ২৪ জন পরিচালক নির্বাচিত হতেন। উক্ত ২৪ পরিচালকই নিজেরা বসে প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতেন। ২৪ পরিচালকের মধ্যে অর্ডিনারি গ্রুপ থেকে ১২ জন, এসোসিয়েটস গ্রুপ থেকে ৬ জন, টাউন এসোসিয়েশন থেকে ৩ জন এবং ট্রেড গ্রুপ থেকে ৩ জন নির্বাচিত হতেন। কিন্তু এবার নির্বাচনে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম চেম্বারের ট্রেড গ্রুপ এবং টাউন এসোসিয়েশনের ৮টি সংগঠনকে ‘অকার্যকর’ ঘোষণা করায় উক্ত দুইটি গ্রুপ থেকে ছয় জন পরিচালকের পদে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। এতে করে এবার চট্টগ্রাম চেম্বারের অর্ডিনারি গ্রুপ থেকে ১২ জন এবং এসোসিয়েটস গ্রুপ থেকে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য সংগঠন১ এর গত ২০ আগস্টের স্মারক নম্বরঃ ২৬.০০.০০০০.১৫৬.০২৪.৯০ (অংশ)..২০৬; মূলে দেয়া নির্দেশনা অনুষায়ী চট্টগ্রাম চেম্বার গত ২৪ আগস্ট স্মারক নম্বরএন/এডিএসি/২৪/৩৫২এর মাধ্যমে টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণীভুক্ত পটিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, বোয়ালখালী অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, হাটহাজারী অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং রাঙ্গুনিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়। একই নির্দেশনা ও স্মারকে অকার্যকর ঘোষিত ট্রেড গ্রুপগুলো হলো চট্টগ্রাম ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্প মালিক গ্রুপ, চট্টগ্রাম টায়ার টিউব ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স গ্রুপ, চিটাগাং ডাইজ অ্যান্ড কেমিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার গ্রুপ এবং চিটাগাং মিল্ক ফুড ইম্পোর্টার্স গ্রুপ। এতে অকার্যকর ঘোষিত উপরোক্ত ৮টি সংগঠনের কেউ আসন্ন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ বা প্রার্থী হতে পারছেন না।

অতীতের নির্বাচনগুলোতে উপরোক্ত ৮টি গ্রুপ থেকে ৬টি পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এবারকার নির্বাচনে এখন পর্যন্ত তারা প্রার্থী হতে পারছেন না। ফলে ৬টি পদ বাদ দিয়ে চেম্বারের প্রেসিডিয়ামে তিনজন এবং পরিচালক পদে ১৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।

চেম্বার সূত্র জানিয়েছে, এবার সরাসরি ভোটে প্রেসিডিয়াম নির্বাচিত হবে। অর্থাৎ আগেই প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হতে হবে। আগে পরিচালকদের ভোটে প্রেসিডিয়াম নির্বাচিত হলেও এবার সাধারণ ভোটারদের ভোটেই নির্বাচিত হবে প্রেসিডিয়াম। এটিকে চেম্বারের আসন্ন নির্বাচনে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন ভোটারেরা।

অতীতে যতবার ইচ্ছে ততবারই চেম্বারের পরিচালক কিংবা প্রেসিডিয়ামে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু এবার পরপর দুইবার নির্বাচিত হলে ন্যূনতম একবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ থাকছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরনের ১২জনকে এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে বলা হয়েছে। তারা হচ্ছেন চেম্বারের সাবেক পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, এ কে এম আকতার হোসেন, মোহাম্মদ অহীদ সিরাজ চৌধুরী, তরফদার মো. রুহুল আমিন, বেনাজির চৌধুরী, ইফতেখার হোসেন, মোহাম্মদ রাকিবুর রহমান, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী এবং মাহবুবুল হক।

চট্টগ্রাম চেম্বার প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা গতরাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার যাবতীয় প্রস্তুতি নির্বাচন বোর্ড থেকে নেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া নির্দেশনা অনুসরণ করেই নির্বাচন বোর্ড একটি অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু ভোটানুষ্ঠানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্ধুর ছুরিকাঘাতে নগরে যুবক খুন
পরবর্তী নিবন্ধবাসা থেকে বর্জ্য নিতে ৭০ টাকার বেশি নয় : মেয়র