বিশেষ ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোচ্চ সতর্কতার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য আনা দুইটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনবাহী এমভি ‘জেন হুয়া ১২’ জাহাজটিকে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে বার্থিং দেয়া হয়েছে। গতকাল বিকেলে চীন থেকে আসা জাহাজটিকে বহির্নোঙর থেকে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়। জাহাজটিতে ২টি কিউজিসির পাশাপাশি ৩টি আরটিজিও রয়েছে। বন্দরের জন্য ১০৪ ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় এই ৫টি ইকুইপমেন্ট আনা হয়েছে। এর আগেও আরো ২টি কিউজিসি, ৩টি আরটিজিসহ ১১টি ইকুইপমেন্ট বন্দরে পৌঁছেছে। ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ইকুইপমেন্টগুলোও বন্দরের বহরে যুক্ত হবে। প্রায় ৯শ’ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম অনেক বেশি গতিশীল হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ২টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি) এবং তিনটি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি) নিয়ে এমভি ‘জেন হুয়া ১২’ জাহাজটি গতকাল বিকেলে বহির্নোঙর থেকে এনসিটি ৫ নম্বর বার্থে নোঙর করে। জাহাজের দুইদিকে বিশাল বাহু বের হয়ে থাকায় কী গ্যান্ট্রি ক্রেনবাহী জাহাজটিকে বার্থিং দিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি বিমান চলাচলেও সর্বোচ্চ
সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে কী গ্যান্ট্রি ক্রেনবাহী জাহাজকে বন্দরের ভিতরে আনা হয়। বহির্নোঙর থেকে ইকুইপমেন্টবাহী জাহাজটিকে জেটিতে আনার সময় বন্দর চ্যানেলের জাহাজ মুভমেন্টসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। সরিয়ে নেয়া হয়েছিল অনেকগুলো নৌযান। বিমান চলাচলের ক্ষেত্রেও সতকর্তা অবলম্বন করতে বলা হয়েছিল। ৭০ মিটার বা প্রায় ২৩০ ফুট উঁচু কী গ্যান্ট্রি ক্রেনগুলোর বাহু বেশ প্রশস্ত।
বন্দরের ৩ জন অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন আসিফ আহমেদ, ক্যাপ্টেন আবু সাইদ মোহাম্মদ কামরুল আলম এবং নূর আলম সিদ্দিকী ক্রেনবাহী জাহাজটিকে ভিতরে আনার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বন্দরের নিজস্ব শক্তিশালী টাগবোট কান্ডারী ৬, ৮, ১০ ও ১১ এবং মুরিং বোট এনএমএল-১ ও আজমত জাহাজটির বার্থিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন ও সহায়তা করে।
আগামী দিন কয়েকের মধ্যে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন দুইটি নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে অপারেশন শুরু করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, এই প্রকল্পের আওতায় আনা অপর দুইটি কিউজিসি এবং ৩ আরটিজি গত ৭ মে বন্দরের বহরে যুক্ত হয়। ইতোমধ্যে ওই দুইটি কিউজিসি ও তিনটি আরটিজি অপারেশন শুরু করেছে। বন্দর সচিব জানান, ইতোমধ্যে আমাদের ১৮টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন হয়ে গেছে, আরটিজি হয়েছে ৪৫টি। নতুন ইকুইপমেন্ট যুক্ত হওয়ায় বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বপ্রথম কী গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হয় ২০০৫ সালে। পরবর্তীতে ২০১৭ ও ১৮ সাল এবং সর্বশেষ চলতি বছর বন্দরের বহরে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হয়েছে।