যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেই ফিলিস্তিনের গাজা উপকূলে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের এই বর্বরতার জবাবও দিচ্ছে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রোববার দিবাগত রাতে মাত্র ২০ মিনিটে ৫৪ ইসরাইলি বোমারু বিমান গাজায় ৩৫টি টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। এতে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য প্রাণহানি ঘটেছে। গত ১০ মে থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় প্রাণ গেছে ২০১ জন ফিলিস্তিনির। নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন শিশু ও ৩৪ জন নারী রয়েছেন। অর্থাৎ নিহতদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই হলো নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি।
রয়টার্স আরো জানায়, রোববার রাতভর গাজার রাস্তা, নিরাপত্তা ভবন, হামাসের ট্রেনিং ক্যাম্প এবং আবাসিক ভবনগুলোতে বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে রাতভর বোমা হামলার শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজা থেকে বীরসেবা ও অ্যাশকেলন শহরে রকেট হামলার পর তাদের যুদ্ধ বিমানগুলো হামাসের উচ্চপদস্থ ৯ জন নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। বাড়িগুলো অস্ত্রের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে এসব হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ইসরায়েলের হামলার জবাবে হামাসও প্রায় ৩ হাজার রকেট ছুঁড়েছে। তবে আয়রন ডোম মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম তার অধিকাংশই অকার্যকর করে দিয়েছে। এরপরও কিছু রকেট আয়রন ডোম ফাঁকি দিয়ে ইসরাইলে আঘাত হেনেছে। এতে ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২০১৪ সালের পর থেকে গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে চলা সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক টুইটে চলমান উত্তেজনা নিরসনে উভয়পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, দুপক্ষকেই উত্তেজনা হ্রাস করতে হবে- এই সহিংসতা অবিলম্বে শেষ হওয়া উচিত। গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে চলমান সংঘাতের বিষয়ে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের পরই ব্লিঙ্কেন এই টুইট করেন। গত রোববার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের কাছে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, পক্ষগুলো যদি যুদ্ধবিরতি কামনা করে তবে সমর্থন দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে। তবে যতদিন প্রয়োজন ততদিন গাজায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। অন্যদিকে, হামাসও তাদের প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছে।
