থেমে গেল তুরস্কের স্বপ্ন দৌড়। ২০০৮ আসরের অর্জনের পুনরাবৃত্তি করতে পারল না তুরস্ক। উল্টো তুর্কিদের থামিয়ে ২০ বছর পর ইউরোর সেমিতে নেদারল্যান্ডস। ইউরোপের ফুটবল মানে ধুম ধারাক্কা লড়াই। পাওয়ার ফুটবলের দারুণ প্রদর্শনী। আর ডাচ ফুটবল মানে টোটাল ফুটবলের সৌন্দর্যের পসরা। আর সে টোটাল ফুটবলের জনকরাই এবারের ইউরোর শেষ চারে জায়গা করে নিল। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও সে ধাক্কা সামলে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল নেদারল্যান্ডস। সঙ্গে প্রতিপক্ষের ভুলও তাদের পক্ষে যায়। আসরে চমক জাগানো তুরস্ক কঠিন চ্যালেঞ্জ জানালেও পেল না আর জালের দেখা। ২০ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে ফের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি–ফাইনালে উঠল ডাচরা। বার্লিনে ইউরোর শেষ কোয়ার্টার–ফাইনালে ২–১ গোলে জিতেছে রোনাল্ড কুমানের দল। ম্যাচের প্রথমার্ধে সামেত আকাইদিনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল তুরস্ক। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরান স্টেফান ডা ভ্রেই। কিছুক্ষণ পরই আত্মঘাতী গোল করে পিছিয়ে পড়ে তুরস্ক। আর সে গোলই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দেয়। ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতায় তুরস্কের সেরা সাফল্য ২০০৮ আসরে সেমিফাইনালে ওঠা। চমক জাগানো পারফরম্যান্স দেখিয়ে সেই অর্জনকে ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছিল তারা এবারেও। কিন্তু আশা জাগিয়েও পারল না তুর্কির তরুণরা। ম্যাচের প্রথম আধা ঘণ্টায় কোনো দলই সেভাবে কারও ওপর চাপ তৈরি করতে পারেনি। আক্রমণ–পাল্টা আক্রমণ চললেও প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেওয়ার মতো কিছু করতে পারেনি কেউ। ৩৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় তুরস্ক। ডান দিক থেকে আর্দা গিলেরের দারুণ ক্রস বঙে পেয়ে হেডে গোলটি করেন ডিফেন্ডার আকাইদিন। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিটে দুবার প্রতিপক্ষের বঙে ভীতি ছড়ায় নেদারল্যান্ডস। কোনোবারই অবশ্য গোলের জন্য শট নিতে পারেনি । উল্টো দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করতে হতো ডাচদের। প্রায় ২৬ গজ দূর থেকে গিলেরের বাঁকানো ফ্রি কিকে বল ঝাঁপিয়ে পড়া বার্ট ভেরব্রুখেনের আঙুল ছুঁয়ে পোস্টে লাগলে রক্ষা ডায় নেদারল্যান্ডস। ৭০ মিনিটে সমতা ফেরায় নেদারল্যান্ডস। মেমফিস ডিপাইয়ের ক্রসে দুর্দান্ত হেডে তুর্কি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইন্টার মিলান ডিফেন্ডার ডা ভ্রেই। পাঁচ মিনিট পরই রক্ষণের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে তুরস্ক। ডান দিক থেকে সতীর্থের পাস দূরের পোস্টে পেয়ে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন কোডি হাকপো। তাকে বাধা দিয়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই ঠেলে দেন তুর্কি ডিফেন্ডার মের্ত মুল্দুর। নেদারল্যান্ডস এগিয়ে যায় ২–১ গোলে। এরপর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তুরস্ক। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তারা। সে সুবাধে অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল তুরস্ক। সেমিহের শটটি দারুণ ক্ষীপ্রতায় রুখে ডাচদের জয়ের পথে রাখেন গোলরক্ষক। বাকিটা সময় রক্ষণ সামলে শেষের বাঁশি বাজতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে পুরো ডাচ শিবির।