২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিঝরা একুশের প্রতীক্ষায় ছিল পুরো জাতি

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ

১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিঝরা একুশের প্রতীক্ষায় ছিল পুরো জাতি। সারা দেশে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরদিন প্রতিবাদের স্বরূপ কী হয় তা নিয়ে তুমুল আলোড়ন চলছিল মানুষের মনে। আর যেসব ছাত্র এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তারা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ১৯৫২ সালের এই দিনে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রস্তুতির তীব্রতা ও অনমনীয় ভাব দেখে পূর্ববঙ্গ সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে। মূলত জনমনে ভীতি ও ত্রাস সঞ্চারের চিরাচরিত পন্থা গ্রহণ করেছিল পাকিস্তান সরকার। তবে এসব ভয়ভীতিতেও দমানো যায়নি ছাত্রদের। দলবদ্ধ হয়ে স্লোগান দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা ১৪৪ ধারা লক্সঘন করে। পথে বেরিয়ে এলে এবং প্রাদেশিক পরিষদ ভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ, বেপরোয়া লাঠিচাজর্, ভয়ভীতি ও নিপীড়ন এবং পাইকারি গ্রেপ্তার শুরু করে।

তখন মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ড বয়, বেয়ারা, মেডিকেল হোস্টেল সংলগ্ন রাস্তার পাশে রেস্টুরেন্টের বয় বেয়ারা, পথচারী, রিকশাওয়ালা প্রমুখ তাদের সঙ্গে যোগদান করে। এ সময় এমএলএ ও মন্ত্রীরা মেডিকেল কলেজের সামনে দিয়ে পরিষদে আসতে থাকেন। ছাত্ররা যতই স্লোগান দেন আর মিছিলে একত্রিত হন পুলিশ ততই হানা দেয়। কয়েকবার ছাত্রদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছেড়ে তাড়া করতে করতে মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ভেতর ঢুকে পড়ে। হোস্টেল প্রাঙ্গণে ঢুকে ছাত্রদের উপর আক্রমণ করায় ছাত্ররা বাধ্য হয় ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ তখন দিগ্‌বিদিক শূন্য হয়ে ছাত্রদের উপর গুলি চালায়।

এম আর আখতার মুকুল সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, বেলা তিনটা দশ মিনিটের সময় আকস্মিকভাবে একদল সশস্ত্র পুলিশ মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের মধ্যে প্রবেশ করে এবং গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে জব্বার ও রফিকউদ্দীন নিহত হন। প্রকাশ্য রাস্তায় পড়ে থাকা গোটা দুয়েক লাশ পুলিশ নিজেদের ট্রাকে নিয়ে যায়। শহীদদের জীবনদান ছড়িয়ে দিয়েছিল বিদ্রোহের আগুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচসিকের সাবেক দুই কাউন্সিলরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধনাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ সব আসামি খালাস