আনোয়ারার বারশত ইউনিয়নের দক্ষিণ বারশত গ্রামের ছোট্ট মুদি দোকানী প্রণব কান্তি নাথ গত ২০ দিন ধরে নিখোঁজ। গত ৩০ মে দুপুরে চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। বন্ধ রয়েছে ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও। এর তিনদিন পর ২ জুন আনোয়ারা থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করেন স্ত্রী সঞ্জু রাণী দেবী। পুলিশ অদ্যবাধি খোঁজ দিতে পারেনি নিখোঁজ চার কন্যা সন্তানের জনক প্রণব কান্তি নাথের। বাবাকে ফিরে পাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে প্রণবের চার শিশু সন্তান। তন্মধ্যে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া সানি, ওয়ানে পড়ুয়া এ্যানি, শিশু শ্রেণিতে পড়ুয়া পূর্ণিমা এবং তিন বছরের পুষ্পিতা এখন বাবার আশায় প্রতিটি প্রহর গুণছে। নিখোঁজের পর থেকে বিভিন্ন স্থানে ধরণা দিয়ে ব্যর্থ হয় অসহায় পরিবারটি। অবশেষে হাজির হয়েছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে। গতকাল শুক্রবার সকালে প্রণব কান্তি নামের সন্ধানের দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তারা। প্রেসক্লাব চত্বরেই চার অসহায় শিশুর আকুতি ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাবাকে ফিরিয়ে দিন’। এসময় নিখোঁজ প্রণব কান্তির বড় ভাই সাধন কান্তি নাথ, সুনীল কান্তি নাথ, ভাগিনা প্রশান্ত নাথসহ পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে প্রণবের স্ত্রী সঞ্জু রানী দেবী বলেন, তার স্বামী প্রণব কান্তি নাথ আনোয়ারার বারশত কালিবাড়ি বাজারে একটি ছোট্ট মুদির দোকান পরিচালনা করেন। গত ৩০ মে দুপুর ২টায় তার পরিচিত সিএনজি অটো রিকশা চালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের গাড়িতে করে আনোয়ারা উপজেলা সদরে যান। ওই দিন রাত ৮ টার দিকে আনোয়ারা চাতুরী চৌমুহনী বাজারের ওয়ান মাবিয়া সিটি সেন্টারের সামনে সিএনজি চালককে টাকা পরিশোধ করে চট্টগ্রাম মহানগরে পণ্য কিনতে যাবেন বলে মোবাইলে জানান। এর পর তার বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় মোবাইলে কল দিলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর নিখোঁজের বিষয়ে গত ২ জুন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সঞ্জু রাণী। সঞ্জু রাণী দেবী বলেন, ‘২০ দিন হয়ে গেল আমার স্বামীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা গরীব মানুষ। আমি চার শিশু সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। পুলিশের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছি না। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’ এসময় পাশে বসে অজোরে কাঁদছিল প্রণব কান্তি নাথের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সানি। সানি বলেন, ‘আমরা চার বোন। আমার বাবাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাবাকে ফেরত চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রাশিদুল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখছি।’