২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

| বৃহস্পতিবার , ৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার আমাদের সর্বশেষ দায়িত্ব পালনের পালা। নির্বাচন অনুষ্ঠান। আজ এই মহান দিবসে আপনাদের সামনে এ বক্তব্য রাখার পর থেকেই আমরা আমাদের সর্বশেষ এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করব। আমরা এবার একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব। খবর বিডিনিউজের।

সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আপনারা সকলেই দোয়া করবেন যেন সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এ দেশের সকল নাগরিক একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখরভাবে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য সকল প্রকার সাহায্যসহযোগিতা প্রদান করবো। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন যেন আনন্দউৎসবের দিক থেকে, শান্তিশৃঙ্খলার দিক থেকে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে সেজন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে আগামীকাল থেকে আমরা সকলেই মানসিক প্রস্তুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন শুরু করব।

প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার কথা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস তাঁর ভাষণে বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের সম্পর্কে দুএকটা কথা বলতে চাই। এবার আমরা প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেয়ার আয়োজন নিশ্চিত করতে চাই। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিধস্ত বাংলাদেশ যে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তার বড় কারণ হলো আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান। নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে। নারী ভোটাররা যেন দেশের সর্বত্র নির্দ্বিধায় আনন্দউৎসাহ সহকারে ভোট দিতে পারে এটা নিশ্চিত করতে চাই। এবার যেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ঢল নামে আমরা সেই লক্ষ্যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেবার কারণে গত ১৫ বছর ধরে নাগরিকবৃন্দ ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনে আমরা আমাদের বকেয়া আনন্দসহ মহা আনন্দে ভোট দিতে চাই। এবারের নির্বাচনে জীবনে প্রথমবার ভোট দিতে যাবে এরকম ভোটাররা নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে, তাদের এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য। এর মধ্যে নতুন নারী ভোটার থাকবে, নতুন পুরুষ ভোটার থাকবে। এর মধ্যে এমন ভোটার থাকবে যারা ১৫ বছর আগে থেকেই ভোট দিতে পারতো। কিন্তু জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি। এর মধ্যে আসবে যারা ১০ বছর আগে, ৫ বছর আগে ভোট দিতে পারত কিন্তু পারেনি। আর আসবে ভাগ্যবান ও ভাগ্যবতীর দল যারা এই প্রথমবার ভোটার হওয়ার যোগ্যতা লাভ করলো এবং সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেয়ার সুযোগও পেয়ে গেল।

নির্বাচনের দিনকে আমরা ঈদের উৎসবের মতো করতে চাই উল্লেখ করে সরকার প্রধান আরও বলেন, এবারের ভোটের আনন্দ থাকবে সবার মধ্যে। আপনারা সবাই বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নাগরিক অধিকার প্রয়োগের মহা আনন্দ পরবর্তী বংশধরদের কাছে তুলে ধরার জন্য। এখন থেকে প্রতিদিন আলাপ করুন, আপনার এলাকায় ভোটদান ব্যবস্থা কেমন হলে সুন্দর হয়, কেমন হলে আনন্দমুখর হয়, সেটা আগে থেকে ঠিক করার জন্য। নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজের ভিত্তি রচনা হবে এবারের নির্বাচনে। তার জন্য প্রস্তুতি নিন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভ্যুত্থানের শহীদরা জাতীয় বীর