বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোস এসোসিয়েশনের (বিকডা) একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সাক্ষাৎকালে বলা হয়, ২০১৬ সালে সুপারিশ করা হলেও হুক পয়েন্ট চার্জ থেকে অফডকগুলো বঞ্চিত হচ্ছে। এই সুপারিশ কার্যকর না হওয়ায় বিদেশি শিপিং লাইনগুলো বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে। সুপারিশ কার্যকর হলে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ২০ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল–এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বিকডার প্রতিনিধি দল। সংগঠনের সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন সহ–সভাপতি খলিলুর রহমান, সহ–সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন, সহ–সভাপতি ইমরান ফাহিম নূর, পরিচালক ইয়াসির রিজভী, পরিচালক বেনজীর চৌধুরী নিশান, পরিচালক ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম মজুমদার, মহাপরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন সিকদার।
পরে বিকডার সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় বলা হয় যে, যদিও বেসরকারি আইসিডিসমূহ দেশের ৫৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামগ্রিক রপ্তানি পণ্যসমূহ হ্যান্ডল করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে কন্টেনারে পরিবাহিত ২৫% আমদানি পণ্য এবং একটি বিশাল ভলিউমের খালি কন্টেনার হ্যান্ডল করে জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে, তথাপি কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্ট সরকারি মহল, নীতিনির্ধারক এবং অংশীজন সংগঠনসমূহ বেসরকারি আইসিডিসমূহের এই অপরিহার্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করতে কুণ্ঠা প্রকাশ করে যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক।
বিকডার সভাপতি বলেন, ঢাকা কমলাপুর আইসিডি পরিচালনার দরপত্রে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীদের নিকট প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে আইসিডি পরিচালনার অভিজ্ঞতা না চেয়ে যে কোনো প্রকল্প ৭০% সম্পাদনের সরকারি ঠিকাদারের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে বেসরকারি আইসিডিসমূহ গত দুই দশক ধরে আইসিডি পরিচালনা করে আসলেও ঢাকা কমলাপুর আইসিডি পরিচালনার দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। তাই বিকডার প্রতিনিধিদল চবক চেয়ারম্যানকে দরপত্রের অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত ধারা পরিবর্তনপূর্বক বেসরকারি আইসিডিসমূহকে ঐ দরপত্রে অংশগ্রহণে সুযোগদানের অনুরোধ জানান।
বিকডার সভাপতি চবক চেয়ারম্যানকে জানান যে, বেসরকারি আইসিডিসমূহ প্রায় ৮৫% রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেনার জাহাজের হুক পয়েন্টে নিয়ে গিয়ে জাহাজে লোডিং করে থাকে। চবক–এর একটি কমিটি ২০১৬ সালে সুপারিশকৃত একটি হুক পয়েন্ট চার্জ অদ্যাবধি বেসরকারি আইসিডিসমূহকে প্রদান করা হচ্ছে না। অথচ হুক পয়েন্ট ডেলিভারির কারণে ‘হুক পয়েন্ট রিবেট’ হিসেবে একটি বিশাল অংকের ডিসকাউন্ট সুবিধা মার্কিন ডলার হিসেবে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলোর নিকট চলে যাচ্ছে যেখানে প্রকৃত কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি আইসিডিসমূহ।
বন্দর চেয়ারম্যান বিকডার প্রতিনিধিদলের উত্থাপিত বিষয়সমূহ খতিয়ে দেখে এসব বিষয়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বলেন, বেসরকারি আইসিডিসমূহ চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবর্ধিত অংশ এবং এসব আইসিডিসমূহের কার্যক্ষমতা, দক্ষতা, সক্ষমতা যত বৃদ্ধি পাবে, চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা তত বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর এবং বে টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের কার্যক্রম দ্রুত আরম্ভ হবে। তিনি আশা ব্যক্ত করেন যে শীঘ্রই বিদেশি খ্যাতিসম্পন্ন অপারেটর চট্টগ্রাম বন্দরের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে যাচ্ছে যা চট্টগ্রাম বন্দরের কাজের গতি ও মান উভয়ই বৃদ্ধি করবে। তিনি আরো বলেন, আগামী পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে যা দেশকে এবং দেশের অর্থনীতিকে একটি বলিষ্ঠ স্থানে নিয়ে দাঁড় করাবে আর এসব কর্মকাণ্ডে বেসরকারি আইসিডিসমূহের কর্মব্যস্ততা ও অংশগ্রহণ আরো বৃদ্ধি পাবে। চবক চেয়ারম্যান বেসরকারি আইসিডিসমূহের সক্ষমতা ও নিরাপত্তার বিষয়টিতে আরো গুরুত্ব আরোপ করার জন্য বিকডা সদস্যবৃন্দকে অনুরোধ করেন। চবক চেয়ারম্যানের সাথে ছিলেন চবক পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম এবং চবক সচিব মো. ওমর ফারুক।












