বায়েজিদে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে বায়েজিদ থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা নুর কাসেম। গতকাল রাত ১২টার দিকে নুর কাসেমের লিখিত এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। এদিকে হত্যাকাণ্ডের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মামলা রেকর্ড করা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে লুকোচুরি করে পুলিশ। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করে বায়েজিদ থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন ফজর আলী (২৯), মো. লিটন (২৮), মো. সোহেল (২৯), মো. নুর আলম ওরফে কালু (২৭), মো. রুবেল (২৫), আহসান কবির (২৬)।
এদিকে নিহতের পিতা নুর কাসেম মামলা রেকর্ডের বিষয়টি সোমবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন। তবে কোন আসামির নাম বলতে চাননি। মামলার এজাহারে আসামিদের নাম বলা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বারণ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বিষযটি এড়িয়ে যান। পরে মুঠোফোনটি অন্য একজনকে দিয়ে দেন তিনি। মুঠোফোনের অপর প্রান্তের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা সারাদিন ক্লান্ত, কারা আসামি হয়েছে, কাল (মঙ্গলবার) জেনে নেবেন।’ এদিকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া আটটায় বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রিটন সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘এখনো মামলা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এজাহার নিয়ে আসেনি। মামলা রেকর্ড হওয়ার পরপরই জানিয়ে দেওয়া হবে।’ এরপর রাত ১২টা পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তাঁর অফিসিয়াল মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
রাত ৯টা ৫০ মিনিটে কথা হয় সেকেন্ড অফিসার বিমল কান্তি দে’র সাথে। তিনি বলেন, মামলার এজাহার টাইপ হচ্ছে। কারা আসামি এখনো জানা যায়নি। রাত ১১টায় ফোন করা হলে তিনি সহকারী কমিশনারের কক্ষে ঢুকেছেন জানিয়ে লাইন কেটে দেন। পরে রাত ১২টা ৫ মিনিটে তিনি মামলা রেকর্ডের বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মো. আলিফকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। তারা ১৯ জনকে আসামি করেছেন। এর আগে আটক ৬ জনকে বাদীপক্ষ শনাক্ত করেছেন। তাদেরকেও এজাহারভুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আরেফিন নগর এলাকায় আলিফ, রিপন, মামুন, সালাউদ্দিন, কুতুবসহ কয়েকজনের একটি গ্রুপ রয়েছে। ওই গ্রুপটি নিয়ন্ত্রণ করে সোর্স আকবর। আকবর নিজেকে বায়েজিদ থানা বাস্তুহারা লীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে ওই এলাকায় পাহাড়কাটা, জমি দখল, খাস জমি একে অপরের কাছে হস্তান্তর করার কাজ নিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। কিছুদিন আগে একটি ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলেও সম্প্রতি জামিনে এসে সে পুনরায় ওই সিন্ডিকেটকে নিয়ে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠছিল। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমনের নিজস্ব একটি গ্রুপ ছিল। সোর্স আকবর ইমনকে নিজের গ্রুপে ভিড়াতে চেয়ে ব্যর্থ হন। ইমন স্থানীয় পিস্তল সোহেল গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। রোববার রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারায় ইমন।