১৯ ওভারেই অলআউট!

ডারবান টেস্টে টাইগারদের অসহায় আত্মসমর্পণ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ৫ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট ক্রিকেটে একটি দল কতটা কুৎসিত ব্যাটিং করতে পারে সেটা সগৌরবে দেখিয়ে দিল বাংলাদেশ দল। ক্রিকেটে দুর্যোগ আসবেই। আর সে দুর্যোগ কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেটা বোধহয় এখনো রপ্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। বিশেষ করে টেস্ট ব্যাটিংয়ে। না হয় কেন একেরপর এক ব্যাটাররা একই ভুল করে উইকেট দিয়ে আসবে। কেশভ মহারাজ ও সাইমন হার্মার, দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুই স্পিনার এমন আহামরি কোনো স্পিনার না যে তাদের বলে একেরপর এক উইকেট দিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা একই ভুল সবাই করে এসেছে। আর সঙ্গে কুৎসিত ব্যাটিং এর প্রদর্শনী করেছে। যার পরিণতি ৫৩ রানে অলআউট আর ২২০ রানের পরাজয়।
এমন ব্যবধানে বাংলাদেশ অনেক ম্যাচে হেরেছে। কিন্তু এমন কুৎসিত ব্যাটিং এর প্রদর্শনী খুব একটা হয়নি বাংলাদেশের। ভাগ্য ভাল তাসকিন আহমেদ ১৭ বলে ১৪ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। না হয় ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গড়া ৪৩ রানের লজ্জার রেকর্ড চাপা পড়ে যেত ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রান এটি। আগের সর্বনিম্ন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ২০১৮ সালে পচেফস্ট্রুমে। সেবার ৯০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০৪ রানে অলআউট করে দিয়ে বাংলাদেশ ২৭৪ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলেই ১১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে হারের পথে এগুচ্ছিল। কিন্তু পঞ্চম দিনের সকালের যাত্রাটা যে এরকম শব যাত্রা হবে সেটা কে ভেবেছিল। শেষ দিনে ২৬৩ রান তুলে জয়ের আশায় মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের করুণ অপমৃত্যু হলো।
দিনের প্রথম ওভারে মুশফিকুর রহিমের আউট দিয়ে পতনের শুরু। এরপর একের পর এক উইকেটের পতনে বাংলাদেশ ১৯ ওভারে অলআউট মাত্র ৫৩ রানে। দিনের খেলার সমাপ্তি ৫৫ মিনিটেই। মহারাজ নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফেরালেন লিটন দাশকে। অফ স্টাস্পে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে লিটন ফ্লিক করেন। কিন্তু বল রাখতে পারেননি নিচে। সহজ ক্যাচ যায় মিড উইকেটে সাইমন হার্মারের কাছে। ১৬ রানে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের। কেশভ মহারাজ উইকেট নিচ্ছেন যেন ওভার প্রতি। দিনের তিন ওভারে উইকেট নিয়ে ফেললেন তিনটি। এবার তার শিকার ইয়াসির আলি চৌধুরি। ৬ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে বাংলাদেশ। মহারাজের ফ্লাইটেড ডেলিভারি সামনে টেনে এনে পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন ইয়াসির। হালকা টার্ন করে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। ২৬ রানে নেই ৬ উইকেট। উইকেট উৎসবে সামিল হলেন এবার সাইমন হার্মারও। এই অফ স্পিনার শূন্য রানে ফেরালেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে টার্ন করা বলে ডিফেন্স করেন মিরাজ। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। শূন্য রানে ফিরলেন মিরাজ। বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ৩৩।
এরপর শান্তর সাথে ১৭ রানের জুটি গড়ে দলকে ৫০ পার করে দেন তাসকিন। এরপর হারমারের দারুণ টার্ন ও ফ্লাইটে পরাস্ত হন শান্ত। লম্বা পা বাড়িয়ে ড্রাইভ করার চেষ্টা করলেও ব্যাটে-বলে হয়নি। বল চলে যায় কিপার কাইল ভেরেইনার গ্লাভসে। সহজে স্টাম্পিংয়ের কাজটি সারেন এই উইকেট কিপার। শান্ত ফিরেন ৫২ বলে ২৬ করে।
এরপর আর মাত্র তিন রানে বাকি দুই উইকেট হারিয়ে ৫৩ রানের অল আউট হওয়ার লজ্জায় পুড়ে বাংলাদেশ দল। ১৭ বলে ১৪ রান করেন তাসকিন। বাংলাদেশ দলেল ৯ জন ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৩৭ ওভার বল করে উইকেট শূন্য থাকা বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২ রানে নিলেন ৭ উইকেট। তিনটি উইকেট নিয়েছেন হারমার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোজায় ভর্তুকিমূল্যে ভোগ্যপণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধপ্রতিদিন দুই হাজার মানুষের ইফতার