চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজের অধীন ৩০টি আদালতের প্রায় ২ হাজার মামলার নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মহানগর পিপি অফিসে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অফিসটির বাইরে রাখা ছিল এসব মামলার নথি। মামলা প্রমাণের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নথি উধাও হয়ে যাওয়ার এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আদালতের অবকাশকালীন গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মামলার এসব নথি উধাও হয়। এ ঘটনায় গতকাল নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূইয়া জিডিটি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, মহানগর দায়রা জজের অধীন ৩০টি মহানগর দায়রা জজ আদালতের ১ হাজার ৯১১টি মামলার নথি গায়েব হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে মহানগর পিপি কার্যালয়ের সামনে রাখা ছিল এসব নথি। নথিগুলো পলিথিনে মোড়ানো ছিল। মূলত পিপি অফিসে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে নথিগুলো আদালতের বারান্দায় রাখা হয়।
আইনজীবীরা বলছেন, আদালতের মতো স্পর্শকাতর জায়গা থেকে স্পর্শকাতর মামলার নথি গায়েব কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। হত্যা, ডাকাতি, মাদক থেকে শুরু বিস্ফোরক মামলা, চোরাচালান মামলার নথি খুঁজে পাওয়া না গেলে এ সংক্রান্ত মামলাগুলো প্রমাণ করা দুষ্কর হয়ে পড়বে। কীভাবে কী হলো তদন্ত করে বের করতে হবে। আদালতের কার্যক্রম নথিনির্ভর।
নথি গায়েবের এ ঘটনায় থানায় ডায়েরি করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মফিজুল হক ভূইয়া ও নগরীর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম। ওসি আব্দুল করিম বলেন, নথি গায়েব হয়েছে অভিযোগে একটি জিডি হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূইয়া বলেন, মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রায় ২ হাজার মামলার নথি পাওয়া যাচ্ছে না। স্থান সংকুলান না হওয়ায় নথিগুলো আমার অফিসের সামনের (আদালত কক্ষের পাশে অবস্থিত) বারান্দায় পলিথিন মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কে বা কারা সেগুলো গায়েব করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করেছি। আশা করছি, পুলিশ দোষীদের খুঁজে বের করবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, নথি গায়ব মারাত্মক বিষয়। নথি হচ্ছে মামলার প্রাণ। নথি ছাড়া অপরাধীকে তার অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া দেওয়া কঠিন। ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করা হোক।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম আদালত পাড়ার নতুন আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের অবস্থান। মহানগর দায়রা জজ, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত মিলে মহানগর দায়রা জজের অধীনে আদালতের সংখ্যা প্রায় ৩০টি।