১৮ সেপ্টেম্বর পঞ্চম দফায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ

২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই অসমাপ্ত ইউনিট ও ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন সম্পন্নের নির্দেশ । ব্যর্থ হলে ২৬ জুলাই সমন্বয় কমিটিগুলো বাতিল বলে গণ্য

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৫ জুলাই, ২০২৪ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ইউনিট আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত সম্মেলন করতেই হবে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানা শাখাগুলোর সম্মেলন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি সম্মেলনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। মহানগর দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, এবারসহ পঞ্চমবারের মতো চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে চারবার সম্মেলনের দিনক্ষণ দিয়ে পিছিয়ে যায়।

মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এম.পি আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের কেন্দ্র নির্ধারিত তারিখ ঘোষণা দিয়ে বলেন, আগামী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ইউনিট আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত সম্মেলন করতেই হবে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনগুলো সম্পন্ন করতে হবে। সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও উদ্যোগ গ্রহণের জন্য থানা ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে যে কমিটি গঠন (সম্মেলনের জন্য ১৫ থানা সমন্বয় কমিটি) করা হয়েছে তারা (আহ্বায়করা) যদি সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অপারগ ও ব্যর্থ হন তাহলে কমিটিগুলো বাতিল হিসেবে বিবেচিত হবে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এম.পি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সারা দেশে তৃণমূল স্তরে নেতৃত্ব ঢেলে সাজানোর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো নেতা যদি ব্যর্থ হন তাঁর যোগ্যতা ও দক্ষতা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, নেতৃত্ব যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা, ত্যাগতিতিক্ষা ও দলীয় আদর্শের প্রতি আনুগত্যের বিষয়সহ সমাজে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব ও পদপদবীতে কোনো অবাঞ্চিত ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোনো ব্যক্তি যাতে আসীন হতে না পারেন সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়ী হতে হবে।

উল্লেখ্য এর আগে ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছির উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আকষ্মিক মৃত্যুর পর সেই শূন্য পদে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে ছয়বছর পর গতবছরের ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিতসভায় তাঁকে ভারমুক্ত করে সভাপতির দায়িত্ব দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরমধ্যে প্রথম দফায় ২০২২ সালের ১ অক্টোবর, ৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা, ১৮ ডিসেম্বর তৃতীয় দফা এবং ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই চতুর্থ দফা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করার পরও সম্মেলন হয়নি; পিছিয়ে যায়।

সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আন্দোলনসংগ্রামে এবং দল ও জাতির সংকট উত্তরণে সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসূ ও কার্যকর অবদান রেখেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি কেন্দ্রের নিদের্শনা অনুযায়ী সাংগঠনিক কার্যক্রম ও বিষয়ভিত্তিক ইস্যুতে সবসময় রাজপথে ছিল এবং বর্তমান নেতৃত্ব অবশ্যই কর্মীবান্ধব হিসেবে সকলের আস্থা অর্জন করেছে। এই আস্থা ও বিশ্বাসকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর আওতাধীন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে যে নির্ধারিত তারিখ ও সময়সূচি করে দিয়েছেন তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মহানগর আওয়ামী লীগসহ থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট স্তরে সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য দলের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা মুখিয়ে আছেন। এসকল সম্মেলনের মাধ্যমেই দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য সকলস্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। এই কার্যপরিধি পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই শতভাগ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং কোন ধরনের দলীয় আদর্শ ও নীতিনৈতিকতা বিরোধী আচরণকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না। আমাদের মধ্যে অবশ্যই নেতৃত্ব ও পদপদবীর জন্য প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের মতো একটি বিশাল সংগঠনে এই প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মত কোনো ঘটনা বা আচরণ যাতে না হয় সেদিকেও সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা এ.কে.এম বেলায়েত হোসেন, সফর আলী, শেখ মাহমুদ ইসহাক, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম এম.পি, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ হাসান মাহমুদ সমশের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মানষ রক্ষিত, জুবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, মাহাবুবুল হক মিয়া, আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য আবুল মুনসুর, নুরুল আবছার মিয়া, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, দোস্ত মোহাম্মদ, গাজী শফিউল আজিম, কামরুল হাসান বুলু, বখতেয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আহমদ ইলিয়াস, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কিষান চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মোহাব্বত আলী খান, আবদুল লতিফ টিপু, . নিছার উদ্দিন মঞ্জু, মোহাম্মদ জাবেদ, বেলাল আহমদ, মোরশেদ আকতার চৌধুরী প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলামের দায়িত্বভার গ্রহণ
পরবর্তী নিবন্ধসাবেক এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা