১৭টি স্লুইচ গেট চালু না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর ‘জলে ডুবা অবস্থা’র নিরসন হচ্ছে না। স্লুইচ গেট চালু না হওয়ায় বৃষ্টির সাথে জোয়ারের পানি ঢুকে নগরীর অধিকাংশ এলাকাকে প্লাবিত করছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি একাকার হয়েই নগরীর জলাবদ্ধতা পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলছে। আগামী বছর চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হবে না বলে মন্তব্য করে সূত্র জানিয়েছে, নেদারল্যান্ডস থেকে গেটগুলো আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে মহানগরীর বিভিন্ন খালে নির্মিত ১৭টি স্লুইচ গেট চালু হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, নগরীর জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গতকালও শহরের বিভিন্ন এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়ি দোকানপাট ও অফিসে পানি থৈ থৈ করেছে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলার পুরোটাই ডুবে যায় পানিতে। আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকাসহ সন্নিহিত এলাকার রাস্তাঘাট সবই ছিল পানির নিচে। গতকাল দিনভর ভারী ও অতিভারী বর্ষণের সাথে জোয়ারের পানি নগরীতে ঢুকে পরিস্থিতি বেহাল করে তোলে। জোয়ারের পানি ঠেকানোর একমাত্র কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে স্লুইচ গেট। অথচ নগরীর ১৭টি খালেই স্লুইচ গেট নেই। গেট স্থাপনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও গেটগুলো না আসায় স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
সিডিএ সূত্র জানায়, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্প এবং আড়াই হাজার কোটিরও বেশি টাকার কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৭টি খালের মুখে স্লুইচ গেট স্থাপনের কাজ চলছে। মেগা প্রকল্পের আওতাধীন ৫টি স্লুইচ গেট আগামী সেপ্টেম্বরে স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পের স্লুইচ গেটগুলো খুব বেশি বড় নয়। এগুলো স্থাপন করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। অবশ্য মহেশখালের গেটটি বেশ বড়। এটিও অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সিডিএ’র প্রকল্পের আওতায় ১২টি স্লুইচ গেট বেশ বড়। এগুলোও আগামী জানুয়ারির মধ্যে স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পুরো বিষয়টি করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্র করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণেই গেটগুলো দেশে আসতে বিলম্ব হচ্ছে। অন্যথায় গত জুনে ১৭টি গেট চালু করা সম্ভব হতো। গেটগুলো চালু হলে শহর এভাবে ডুববে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে সবগুলো গেট স্থাপন করা সম্ভব হবে। স্লুইচ গেট চালু হলে জোয়ারের পানি শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। এতে শহরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি ঘটবে। তিনি বলেন- আগামী বর্ষায় নগরবাসী সুফল পাবেন।