নানা প্রলোভন দেখিয়ে ১৭টি বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে তার ১৭ বিয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদের গত মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী (পরিচিতি নং–১৩১৪০)-এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা–২০১৮–এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিধি ১২(১) অনুযায়ী তাকে সাময়িকভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন মনে করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত কালে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন এবং বরিশাল থেকে রংপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন। খবর বাসসের।
কবির হোসেন গতকাল বুধবার সকালে নিজেই গণমাধ্যমকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে বন বিভাগের পদ ব্যবহার করে নারীদের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে তিনি দু’বার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। তবে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির সুপারিশে তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
এর আগে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল খুলনার সোনাডাঙা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ ছিল বিয়ের নামে প্রতারণা, যৌতুক দাবি ও নির্যাতন। এর আগেও ২০১৯ সালে বাগেরহাটের মোংলার নাসরিন আক্তার দোলন একই অভিযোগে আদালতে মামলা করেন, যা এখনো বিচারাধীন। নতুন অভিযোগের পর মন্ত্রণালয় ৯ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাইদুর রহমান বরিশালে সরেজমিন তদন্ত করেন। ওইদিন কাশিপুরে বন বিভাগের কোস্টাল সার্কেল অফিসে দুই স্ত্রীসহ স্বজনদের লিখিত জবানবন্দি নেওয়া হয়। ভুক্তভোগীরা মানববন্ধনের মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে বিভাগীয় শাস্তির অংশ হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কবির হোসেন চাঁদপুরের মতলব থানার তুষপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারীর ছেলে। তিনি আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
বরখাস্তের পাশাপাশি মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন।