চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামী ১৫ অক্টোবর দক্ষিণ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা সম্মেলনের আগে জুলাইয়ের মধ্যে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন সম্মেলন এবং ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপজেলা সম্মেলন শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিটি উপজেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে জেলায় জমা দেয়া এবং জেলা থেকে এই কমিটি কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এই ঘোষণা দেন। সভায় ৮ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাদের বক্তব্যে আট উপজেলার সংগঠনিক চিত্র তুলে ধরেন। হুইপ বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা সম্মেলন শেষ করে ব্যাপক হারে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। আগামী নির্বাচনে দলকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনার জন্য নেতাকর্মীদের যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের অর্থ পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি ও প্রফেসর ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী এমপি।
হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, তৃণমূলে নেতাকর্মীরা হচ্ছেন সংগঠনের প্রাণ। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বিশ্বস্ত। শেখ হাসিনার বিশ্বাস রয়েছে এই তৃণমূলের ওপর। জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতারাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা সমস্যা, নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে আওয়ামী লীগ। অনেক নেতা দ্বিধান্বিত ও বিচলিত হয়েছেন, অনেক নেতা দল ত্যাগ করেছেন, মূল নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেঈমানি করেনি। তৃণমূলের ঐক্যের কারণে শেখ হাসিনা অতীতে বহু বিপদ সঙ্কুল পথ পেরিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অহেতুক সমালোচনা করবেন না। দল-নৌকা আমাদের, নৌকাকে জিততেই হবে। শেখ হাসিনা মানে উন্নয়ন, অগ্রগতি। শেখ হাসিনা থাকলেই দেশ ভালো থাকবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কালাম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইদ্রিস, মো. হাবিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও এম এ সাঈদ, এস এম আবুল কালাম, সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন, প্রদীপ দাশ ও মোছলেহ উদ্দিন মনসুর, অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন, আবু সুফিয়ান, খোরশেদ আলম, নুরুল আবছার চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, বোরহান উদ্দিন এমরান, অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, গোলাম ফারুক ডলার, আবদুল কাদের সুজন, আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জু, মো. নাছির, ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, বিজয় কুমার বড়ুয়া, আবদুল মোতালেব সিআইপি, নুরুল আলম, দেবব্রত দাশ, মোস্তাক আহমদ আঙ্গুর, ওমর ফারুক, আয়ুব আলী, মাহবুবুর রহমান সিবলী, সৈয়দুল মোস্তফা চৌধুরী রাজু, এ কে আজাদ, ছিদ্দিক আহমদ বিকম, সেলিম নবী, বিজন চক্রবর্ত্তী, শাহিদা আক্তার জাহান, খোরশেদ আলম, সালাউদ্দিন হিরু, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, এম এ মালেক, কুতুব উদ্দিন, নুরুল আমিন চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন, আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, আবু আহমদ জুনু, হায়দার আলী রনি, মাহবুবুর রহমান খোকা, শামীমা হারুন লুবনা, মোহাম্মদ জোবায়ের, জহুরুল ইসলাম জহুর, অ্যাডভোকেট তোফায়েল, এস এম বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৫ সালে। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে পুনরায় সভাপতি এবং মোছলেম উদ্দিন আহমেদকে পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছিলেন। বাবুর মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে মোছলেম উদ্দিন আহমদেকে সভাপতি ও মফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলার কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির মেয়াদ বর্তমানে ৯ বছর চলছে।