মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়েত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে সহিংসতার মামলায় ১৭৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রামের ৬ষ্ট অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুর রহমান মজুমদার এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুদ্দিন সিদ্দিকী আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সহিংসতার ঘটনায় ১০৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা তিন হাজার জনের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করে। তদন্ত শেষে ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এর মধ্যে এক অন্ধ ও এক বয়স্ক আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে ১৭৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ধার্য তারিখ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হবে।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়েত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মূলত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেদিন অন্যান্য জায়গার মতো লোহাগাড়ার আমিরাবাদ বাজারের চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লোহাগাড়া থানার এসআই মো. আব্দুল আওয়াল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক লাঠি সোটা, কিরিচ, হকিস্টিক এবং দেশী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ককটেল ফাটিয়ে যানবাহনে অগ্নি সংযোগ করে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, দোকানপাট ভাংচুর করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়। ঘটনাস্থলে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর উপর গুলি, ককটেল, ইট পাটকেল, লাঠি সোটা নিক্ষেপ করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, আসামিদের গুলির আঘাতে মেজবাহ উদ্দিন নামের এক যুবক জখম হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে আসামিরাই তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পদুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তার লাশ অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখে আসামিরা। পুরো ঘটনায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয় উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আসামিরা দন্ডবিধি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের বিভিন্ন ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।