চট্টগ্রাম কাস্টমসে গতকাল অনুষ্ঠিত প্রকাশ্য নিলামে প্রতি কেজি আপেলের সর্বোচ্চ দর উঠেছে মাত্র ১৯ টাকা ৮০ পয়সা! অথচ চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কেজিপ্রতি আপেলের সংরক্ষিত দাম নির্ধারণ করে ১৬৬ টাকা। নগরীর আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকার সিঙ্গাপুর সমবায় মার্কেটের মাসুম এন্টারপ্রাইজ ২৫ হাজার ৪৯৯ কেজি আপেলের জন্য বিড করেন ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। এর আগে ১২ টন প্রিমিয়াম এনজাইম সলিউশন নামের টেক্সটাইল রাসায়নিক পদার্থের জন্য সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২০ হাজার বিড করেন নগরীর ঘাটফরহাদবেগ এলাকার হাজী ফেরদৌস আলম। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব রাসায়নিক পদার্থের সংরক্ষিত মূল্য ধরে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬২৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি রাসায়নিক সর্বোচ্চ দর উঠেছে প্রায় ২৭ টাকা। কাস্টমস দাম নির্ধারণ করে কেজি হিসেবে ১২২ টাকা।
আপেলের সর্বোচ্চ দরদাতা মাসুম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মাসুম বলেন, এখানে সাড়ে ২৫ টন আপেলের জন্য আমি বিড করেছি। কন্টেনারে অনেক আপেল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন প্লান্ট কোয়ারাইন্টাইন পরীক্ষায় যদি এসব খাওয়ার উপযোগী এবং ফরমালিনমুক্ত হয় তবে আমি খালাস নেবো। রাসায়নিক পদার্থের সর্বোচ্চ দরদাতা হাজী ফেরদৌস আলম বলেন, প্রিমিয়াম এনজাইম সলিউশন মূলত টেঙটাইল ডাইং কারখানার কাজে ব্যবহৃত হয়। আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছি। তবে এসব রাসায়নিক পদার্থ আগামী ১১ ডিসেম্বরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। তাই অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে আমি বিড করেছি। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পচনশীল পণ্যের নিলামের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ–কমিশনার মো. আবদুল হান্নান বলেন, বন্দর ইয়ার্ড খালি করার জন্য আমরা এখন থেকে পচনশীল পণ্য দ্রুত নিলামের উদ্যোগ নিয়েছি। এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে অখালাসকৃত শত শত পচনশীল পণ্যের কন্টেনার পড়ে থাকলেও সঠিক সময়ে পণ্য নিলামে না তোলার কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব পণ্যের যথাযথ মূল্য পাচ্ছে না এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। শুধুমাত্র কাস্টমসের গাফিলতির কারণে কন্টেনারে পঁচে যাচ্ছে পণ্য। সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর প্রায় ২৮ টন হিমায়িত মহিষের মাংস প্রকাশ্য নিলামে তুলে কাস্টমস। এসব মাংস নষ্ট হয়ে গেছে–এমন অভিযোগ এনে অনেক বিডার নিলামে অংশ নেননি। পরবর্তীতে রাজশাহীর শাহ মখদুম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৪ লাখ টাকা বিড করে সর্বোচ্চ দরদাতা হন। অথচ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব মাংসের সংরক্ষিত দাম দরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
