চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়নের আলোকে সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ধার্যকৃত ১৬০ কোটি ১৬ লাখ টাকা গৃহকর আদায়ের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। গতকাল দুই সংস্থার প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে টাইগারপাস নগর ভবনে জরুরি মিটিং করেন। সভায় কিভাবে ধার্যকৃত পৌরকর আদায় করা যায় তার উপায় খোঁজা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় মিটিং।
এ বিষয়ে চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা শাহেদা ফাতেমা চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সভায় প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। পৌরকর ধার্যের ক্ষেত্রে যে মেজারমেন্ট করা হয়েছিল তার কাগজপত্র তারা (বন্দর প্রতিনিধি) নিয়ে গেছে। সেগুলো দেখে আপত্তি থাকলে সেটা জানাবেন। এটার চূড়ান্ত সমাধান হতে সময় লাগবে। ঈদের পর আমরা আবার মিটিং করব। বৈঠকে উপস্থিত চসিকের এক কর কর্মকর্তা আজাদীকে জানান, অতীতে বন্দরের স্থাপনার এসেসমেন্ট করার সময় তাদের প্রতিনিধিরাও সাথে ছিলেন। যৌথভাবেই করা হয়েছিল। কাজেই এখন পুনরায় এসেসমেন্ট করা যাবে না বিষয়টি তারা স্বীকারও করেছেন। তারপরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।
জানা গেছে, পৌরকর নির্ধারণে ২০১৭ সালে পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন করেছিল চসিক। এতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবিত পৌরকর ছিল ১৬০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন কার্যক্রম স্থগিত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। যা গত বছরের ১৫ অক্টোবর প্রত্যাহার করা হয়। এরপর বন্দরকে পুনর্মূল্যায়নের আলোকে পৌরকর পরিশোধ করতে গত ডিসম্বের মাসে নোটিশ দেয় চসিক। কিন্তু সংস্থাটি তাতে আপত্তি জানিয়ে চসিককে চিঠি দেয়। এরপর গত ১৫ মার্চ বন্দর চেয়ারম্যান মেয়রের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে নতুন করে কর পুনর্মূল্যায়ন করার বিষয়ে প্রস্তাব দেয় বন্দর। সে অনুযায়ী যৌথ কমিটিও গঠন করা হয়। অথচ কর বিধি ১৯৮৬ আলোকে পঞ্চবার্ষিক মূল্যায়নকৃত গৃহকরের বিপরীতে কর পুনর্মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। তাই কর আদায়ের উপায় খুঁজতে যৌথ কমিটি করা হয়। গতকাল ওই কমিটির সভা হয়েছে।
চসিক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের পূর্বে বন্দরের স্থাপনার বিপরীতে পৌরকর ধার্য করা হয়েছিল ২০১১ সালে। একই বছরের নভেম্বর মাসে দুই সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। এর আলোকে চসিককে প্রতি অর্থ বছরে পৌরকর বাবদ ৩৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে হবে চবককে। যা সারচার্জ মওকুফের সুযোগ নিয়ে সংস্থাটি ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে আসছে। ২০১৭ সালের পুনর্মূল্যায়িত পৌরকর আদায় করতে পারলে চসিকের রাজস্ব আদায় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এতে ত্বরান্বিত হবে নগর উন্নয়ন।











