বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দারুণ মেধাবী হিসেবে দলে এসেছিলেন মোমনিুল হক নৌরভ। কিন্তু ধীরে ধীরে তার গায়ে কেবল টেস্ট ক্রিকেটারের টেগটা লেগে যায়। সাদা বলের এই ক্রিকেটে মোমিনুল অবশ্য কেবলই দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন। আরো একটি সেঞ্চুরি তুলে নিলেন মোমিনুল। তবে এই সেঞ্চুরিটা এসেছে দীর্ঘ ১৫ মাস পর। আর ভারতের মাটিতেও প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি এটি মোমিনুলের। ভারতের মাটিতে এর আগে ৮ ইনিংস খেলে ৯৬ রানের বেশি করতে পারেননি মোমিনুল হক। অবশেষে কানপুর টেস্টে খোলস ছেড়ে বের হতে পারলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ১৫ মাস পর পেলেন সেঞ্চুরির দেখাও। তারপরও অবশ্য সেশনটা পুরোপুরি হয়নি বাংলাদেশের। শুধু সেশনই নয় দিনটাও ভাল কাটেনি বাংলাদেশের। চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে মাত্র ২৩৩ রানে। যেখানে মোমিনুলের একার অবদান ১০৭ রান। শেষ পর্যন্ত একপ্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিতই থেকে যান মোমিনুল। কিন্তু অপরপ্রান্তে বাকিরা কেবলই আসা যাওয়া করেছেন। দিনের শুরুতেই ১১ রান করা মুশফিকুর রহিমকে বোল্ড করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। শুরুতে কিছুটা আক্রমণাত্মক থাকলেও মোহাম্মদ সিরাজের কাছে উইকেট হারান লিটন দাস। ৩০ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ১৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর সাকিব আল হাসানও থিতু হতে পারেননি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল হাওয়া তুলে দেন তিনি। পেছনে দৌড়ে গিয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নেন সিরাজ। ১৭ বলে ২ চারে ৯ রানেই থামে সাকিবের ইনিংস।
একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনে নেওয়ার পাশাপাশি এর মাঝে অবশ্য ফিফটি তুলে নেন মোমিনুল। এরপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ছুটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। প্রথম সেশনের শেষ ওভারে অশ্বিনকে সুইপে চার মেরে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। হেলমেট খুলে মিরাজের সঙ্গে উচ্ছ্বাসই বলে দিচ্ছিল মুহূর্তটির জন্য কতটা ব্যাকুল ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ক্যারিয়ারে এটি তার ১৩তম সেঞ্চুরি এবং বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয়। সবশেষ গত বছরের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন মোমিনুল হক। কানপুরে এনিয়ে দ্বিতীয়বার সফরকারী কোনো দলের ব্যাটার সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। এর আগে ২০০৪ সালে ১৬৩ রান করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু হল। ৬৫ টেস্টের ১২১ ইনিংসে ৪২৬৩ রান করেন মোমিনুল। যেখানে সেঞ্চুরি করেছেন ১৩টি। তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ১৮১ রানের। যা তিনি চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ২০১৩ সালে। মোমিনুল হাফ সেঞ্চুরি করেেেছন ১৯টি। ক্যারিয়ারে চার মেরেছেন ৫০৩ টি। আর ছক্কা মেরেছেন ১৪টি। তার ক্যারিয়ার গত ৩৮.৭৫। টেস্ট ক্রিকেটে মোমিনুলের স্ট্রাইক রেট ৫৪.২৭। ১১ ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। প্রথশ ইনিংসে দারুন এক সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে আবার বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। আজ ম্যাচের শেষ দিনে ওপেনার সাদমান ইসলামকে নিয়ে আবার নতুন করে শুরু করবেন মোমিনুল। এই ম্যাচ বাঁচাতে হলে মোমিনুলকে আরো একবার দায়িত্ব নিতে হবে। তাই দলকে কতটা টানতে পারেন মোমিনুল সেটাই এখন দেখার বিষয়।