চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেছেন, স্বল্প সময়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করতে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পেইনকে সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জরুরি, তা না হলে এ কার্যক্রম সফল হবে না। এ কর্মসূচি নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এটি সফল করতে জাতিকে অন্ধত্ব ও অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি। গতকাল নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন–২০২৫ উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে এডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. অংসুইপ্রু মারমা, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপপরিচালক) ডা. মো. আবদুল মান্নান। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. নওশাদ খানের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, শিক্ষা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা সভায় অংশ গ্রহণ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অংসুইপ্রু মারমা বলেন, বছরে ২ বার শতকরা ৯৮ ভাগ শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানোর ফলে ভিটামিন ‘এ’ অভাবজনিত অন্ধত্বের হার শতকরা ১ ভাগের নিচে কমে এসেছে। শিশু মৃত্যুর হারও কমেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো চলমান রাখতে হবে। ভিটামিন ‘এ‘ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, কোন শিশু ভিটামিন ‘এ‘ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে যাতে বাদ না যায় সে দিকে সবাইকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে সকল বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসি ল্যান্ডদের অবহিত করা হবে। তারাও যেন বিষয়টি নিয়ে কাজ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আগামী ১৫ মার্চ শনিবার চট্টগ্রাম জেলায় অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৬–১১ মাস বয়সী ও ১২–৫৯ মাস বয়সী ৮ লাখ ২৫ হাজার ৭১৬ জন শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার স্থায়ী, ভ্রাম্যমান ও অস্থায়ী কেন্দ্রে ৬–১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ‘ ও ১২–৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ‘ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।