১৫ জানুয়ারি থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলবে বাস

ভাড়া না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ।। বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সাথে মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠক

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী, আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সড়কে বাস চলাচল করবে বিদ্যমান ভাড়া নিয়েই। তবে এ নির্দেশনার পর থেকেই ভাড়া বাড়ানো বা যত আসন তত যাত্রীর দাবি জানায় মালিক পক্ষ। তাদের মতে, বিপুল সংখ্যক নগরবাসীর এই শহরে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করলে গণপরিবহন সংকটে পড়তে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে যত আসন তত যাত্রী পরিবহনের অনুমতি চেয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বাস মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব তথ্য জানান।
প্রসঙ্গত গত সোমবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৩ জানুয়ারি থেকে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এ নির্দেশনার পর থেকেই ভাড়া বাড়ানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ দেওয়া শুরু করেন বাস মালিকরা। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে গতকাল দুপুরের পর সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসে বিআরটিএ। ওই বৈঠকে, বাসভাড়া না বাড়িয়ে যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, বৈঠকে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা প্রস্তাব করেছেন, বিধিনিষেধ চলাকালে বাস ও মিনিবাসে শতভাগ যাত্রী পরিবহন করা হলে মালিকদের লোকসান গুনতে হবে না। ৫০% যাত্রী পরিবহন করা হলে পরিবহন সংকট চরম আকার ধারণ করবে ও যাত্রীদের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছাবে। এ অবস্থায় বাস ও বাস টার্মিনালে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে এখন যেভাবে বাস ও মিনিবাসে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে সেভাবে শতভাগ যাত্রী পরিবহন করা উচিত। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের এ প্রস্তাব সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কাছে পাঠানো হবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এখন বাস ভাড়া বাড়ানো যৌক্তিক হবে না। কারণ গত নভেম্বর মাসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বাসে যাত্রী পরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আমাদের ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তারা সবশেষে একমত হয়েছেন যে ভাড়া বাড়ানো হলে যাত্রীদের ওপর বেশি চাপ তৈরি করা হবে এবং এটি এ মুহূর্তে বাড়ানো যৌক্তিক হবে না।
এদিকে চট্টগ্রামের বাস মালিকরা বাস ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষে সভাপতি খোরশেদ আলম ও মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু এ দাবি জানান। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। বিবৃতিতে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি থেকে সরকার সারাদেশে ১১টি জরুরি বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। সরকারের সব বিধিনিষেধের প্রতি বাস মালিকেরা আন্তরিক। কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ভাড়া নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান হয় এবং স্বাভাবিক হয় যান চলাচল। এর আগে লকডাউনের আওতায় প্রতি সিট একজন করে যাত্রী বহন করা হয় এবং ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়। মালিকরা ক্ষতি হলেও দেশের স্বার্থে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন সচল রাখতে হলে, পূর্বের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে হবে। পাশাপাশি করোনা থেকে যাত্রীদের সুরক্ষায় প্রত্যেক অটোরিকশা, টেম্পু, প্রাইভেট কার এবং মাইক্রোবাসসহ ভাড়ায় চালিত সব গাড়িকে স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঝুঁকি কমাতে দিনে অর্ধেকে নামল শিক্ষার্থীর সংখ্যা
পরবর্তী নিবন্ধশান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন আরও একধাপ এগোল : প্রধানমন্ত্রী