বাংলাদেশ তার বুকে সবচেয়ে ভারী যে অন্যায়টি লালন করছে তা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লাশ। তাঁর কবরে কোনো লাশ নয় যেন একটি গোটা দেশ শুয়ে আছে। তাঁর লাশটি যেন হয়ে ওঠে ক্ষতবিক্ষত-রক্তাক্ত-বিধ্বস্ত এক বাংলাদেশের মানচিত্র। ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্ব জুড়ে যে বাংলাদেশের উপস্থিতি ছিল সারা জীবন, মৃত্যুর পরেও যেন সেই বাংলাদেশেরই অবস্থান। সারা বাংলায় বঙ্গবন্ধুর সমান উচ্চতার আর কোনো লোক নেই। কবি রফিক আজাদ বলেন―
‘এ দেশের যা-কিছু তা হোক না নগণ্য, ক্ষুদ্র তাঁর চোখে মূল্যবান ছিল, নিজের জীবনই শুধু তাঁর কাছে খুব তুচ্ছ ছিল; স্বদেশের মানচিত্র জুড়ে পড়ে আছে বিশাল শরীর….।’
আগস্ট মানেই বাঙালির শোকের মাস। কান্নাভেজা অশ্রুসিক্ত রক্তাক্ত অধ্যায়ের অন্যনাম ১৫ আগস্ট। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কময় রাত এটি। যে রাতে স্ত্রী-সন্তানসহ সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বীরের জাতির পিতা বীরের মতো মৃত্যুবরণ করেছেন। সেদিক দিয়ে বাঙালি জাতির ট্র্যাজেডির মহানায়কও তিনি। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এমন আরেকজন মহান নেতার আর্বিভাব ঘটেনি। শোকে স্তব্দ জাতি সেদিন কাঁদতে চেয়েও পারেনি। প্রকৃতি কেঁদেছিল; মানুষ কাঁদতে পারেনি। ঘাতকের উদ্ধত সঙ্গিন তাদের কাঁদতে দেয়নি। বাংলার প্রতিটি ঘর থেকে এসেছিল চাপা দীর্ঘশ্বাস। কেঁদেছিল আকাশ-বাতাস। এ অনুভূতি ছিল শোকের। পিতা হারানোর শোক। কী নিষ্ঠুর, কী ভয়াল, কী ভয়ঙ্কর-সেই রাত। যা ৪১ বছর পরও বাংলার জনগণ ধূলিকণা পরিমাণও ভুলতে পারেনি। ভুলতে চায়নি, ভুলতে পারবে না। মুজিবকে হারিয়ে সেদিন হেরেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সৃষ্টির পূর্বাপর দুটি ঘটনা কোনোভাবেই সাধারণ চোখে দেখার সুযোগ নেই। একটি হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যটি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা। তাই মুক্তিযুদ্ধকে অবহেলার চোখে দেখা ও বিবেচনা করা যেমনটি অন্যায় ঠিক তেমনি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টকেও অবজ্ঞার চোখে দেখা অন্যায়। বাঙালি কতটা লোভী ও ক্ষমতান্ধ হলে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটাতে পারে তা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে। বছর ঘুরে রক্তের কালিতে লেখা সে দিন-রাত আবার ফিরে এসেছে। কবি শামসুর রাহমানের কথায় উচ্চারণ করি―
‘ধন্য সেই পুরুষ, যার নামের উপর রৌদ্র ঝরে
চিরকাল গান হয়ে/ নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা
যার নামের উপর কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া
ধন্য সেই পুরুষ যার নামের উপর ঝরে
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।’
‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ দুটি নাম, একটি ইতিহাস। উভয়ে যেন মুদ্র্রার এপিঠ আর ওপিঠ। একটি ছাড়া অন্যটি যেন মূল্যহীন। দুটি শব্দ একে অপরের পরিপূরক, যা আজ ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। যুগে যুগে কিছু মহাপুরুষ পৃথিবীতে আসেন কোনো কোনো জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে। বঙ্গবন্ধুও তেমনি একজন। মহাপুরুষদের মধ্যে মানবিকতা ও সরলতা এ দুটি গুণ অতিমাত্রায় থাকে, যার কারণে দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি থাকে তাদের সীমাহীন দরদ, আস্থা ও ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধুরও ছিল তেমনি। এই আস্থা ও ভালোবাসা যেমন জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে এনেছিল আবার তেমনি তার নিজের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ভাষায়―‘বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন সেই মানুষ, যিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে বাঙালিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। তাঁর মধ্যে একজন নেতার সব রকম গুণাবলি ছিল। তাঁর মধ্যে যেটি ছিল না, সেটি হচ্ছে কূটবুদ্ধি। তিনি মানুষকে খুব সহজেই বিশ্বাস করতেন। যার জন্য তাঁকে জীবন দিতে হয়েছিল।’ সাধারণ মানুষকে কাছে টানা ও সম্মোহন করার ক্ষমতা ছিল তাঁর অসীম। এমন অসীম ক্ষমতার অধিকারী মানুষ বাংলাদেশে আর একজনও জন্মগ্রহণ করেননি। অথচ আমরা বাঙালি জাতি এতটাই অকৃতজ্ঞ যে যিনি আমাদের স্বাধীনতা ও জাতিরাষ্ট্রের স্বীকৃতি এনে দিলেন ও প্রতিষ্ঠা করলেন আর আমরা তাঁকেই সপরিবারে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করলাম। দেখলাম স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির রক্তে রঞ্জিত লাশ সিঁড়ির ওপর পড়ে রইল!
বলার অপেক্ষা রাখে না, ইতিহাসের এই নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনারই অংশ। সদ্য স্বাধীন দেশ গঠনে যখন সরকার ব্যস্ত, তখনই হত্যা করা হলো দেশের স্থপতিকে। এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করার, ভিন্ন পথে ধাবিত করার এক গভীর ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি যেমন ছিল, তেমনি ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিতে লুকিয়ে থাকা কিছু সুযোগসন্ধানী ও নিচু মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকেই সুযোগ খুঁজতে থাকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, নানা ছত্রচ্ছায়ায় তারা সংগঠিত হতে শুরু করে। আর তাদের সঙ্গে হাত মেলায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি। আর তারই শিকার হন শেখ মুজিবুর রহমান। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনা কেবল একজন ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারকে হত্যার প্রয়াস ছিল না, ছিল জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নকেই হত্যার অপচেষ্টা। ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে খুন করে তারা একটি আদর্শকে খুন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আদর্শের মৃত্যু নেই―এই সত্যটি তারা উপলব্ধি করতে পারেনি।
বস্তুত পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট বাংলাদেশ নামক কল্যাণ রাষ্ট্রটির হত্যারই একটি অপচেষ্টা, ঘাতকের এটা জানা ছিল যে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতে সামরিক সন্ত্রাস, উগ্র-মৌলবাদ আর সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যের বাংলাদেশ তৈরি সম্ভব নয়। বাংলাদেশ দশকের পর দশক ধুঁকে ধুঁকে মরেছে। আর আকাশে ধ্বনিত হয়েছে খুনিদের উল্লাস ও আস্ফালন। তাই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মতো লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত রাষ্ট্র বাংলাদেশেরও মৃত্যুঘণ্টা বাজানোর চেষ্টা হয় ওই দিন। বাংলাদেশের ভিত্তি যে শাসনতন্ত্র তা ভূলুণ্ঠিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয় তখনই। তাই একুশ বছর হীন চক্রান্ত করে ঠেকিয়ে রাখা হয় আওয়ামী লীগকে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়াকেও তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলম্বিত করেছিল। একাত্তরের ঘাতকদেরকে বসানো হয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতায়। তাই এই অমানবিক হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশের হত্যাকাণ্ডই বলা চলে। বাংলাদেশের মূলনীতিগুলোকে হত্যা করার অপচেষ্টা। পঁচাত্তরের ঘাতকদের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল বাঙালি ও বাংলাদেশকে অভিভাবকহীন করা।
আমরা ইতিহাস পাঠে জানতে পারি―বাঙালির কোনো দিন স্বাধীন কোনো রাষ্ট্র ছিল না। বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম-শোষণ-বঞ্চনার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে অসংখ্য শহীদের রক্ত আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেয়ার কৃতিত্ব বঙ্গবন্ধুর। শেখ মুজিব সকল বাঙালিকে অতিক্রম করেছিলেন তেজে, সাহসে, স্নেহে, ভালোবাসায়। এমন কি দুর্বলতায়ও। তাঁর দুর্বলতা ছিল তিনি বাংলার মানুষকে ভালবাসতেন এবং বিশ্বাস করতেন। এমন ঈর্ষণীয় ভালোবাসা ছিল তাঁর। মুজিব হত্যার অন্যতম কারণগুলোর একটি ছিল ঈর্ষা। মুশতাক মুজিবকে ঈর্ষা করতেন। অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিমের ভাষায়―‘কেবল এই কথাটি বুঝেনি যে, ঈর্ষার পীড়িত হয়ে ঈর্ষিতের স্থান দখল করা যায় না।’
একথা অনস্বীকার্য যে, ‘মুক্তিযুদ্ধ’ বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং নয়মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ ইত্যাদি ঘটনাবলির ভিতর দিয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান―‘যার যা আছে, তা-ই নিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার’ আহ্বান জানিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন―‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বলতে গেলে সেদিনই বাঙালির বুকে স্বাধীনতার বীজমন্ত্র বোনা হয়ে যায়। পুরো ভাষণই ছিল অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ, ছন্দোময়। এ যেন কোনো মহাকবির মহাকাব্য। কী অপূর্ব শব্দচয়ন! কী অতুলনীয় ছিল উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি। এ ভাষণের মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতা প্রাপ্তির যে উদ্দীপনা ও মহামন্ত্র ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাতে বাঙালিরা জীবনের মায়া তুচ্ছ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধু ছয় দফাকে এক দফায় পরিণত করতে এ ভাষণেই তিনি বাঙালির স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা দেন। এ ভাষণেই ছিল একটি রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের কথা। সে সময়ই তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অবিকল্প নেতা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নয় মাস কারান্তরালে থাকা সত্ত্বেও তার স্বাধীনতার ঘোষণাকেই চূড়ান্ত বলে গ্রহণ করেছিল যেসব মুক্তিযোদ্ধা তাদের কানে সার্বক্ষণিক ধ্বনিত হতো বঙ্গবন্ধুর তেজোদ্দীপ্ত আহ্বান। তাদের বুকজুড়ে ছিল বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বল উপস্থিতি। মাথার ওপর বঙ্গবন্ধুর মতো বিশাল এক মহীরুহ সদৃশ মহানায়ক আছেন―এই নির্ভরতা তাদের সাহস জুগিয়েছিল যুদ্ধের মাঠে। মানব ইতিহাসের এটি হয়ে থাকবে সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী দৃষ্টান্ত যাতে একজন মানুষকে আমরা দেখি একটি জাতিগত স্বপ্নের অবয়ব নিতে এবং সেই মানুষের ব্যক্তিত্বের প্রভাব এতটাই গভীরে ছিল যে তাঁর উদ্দীপক উপস্থিতি রোধ করা যায়নি। তাই বাংলাদেশের আরেক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো, তিনি আমাদের বাঙালি জাতিসত্তাকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই প্রক্রিয়া হঠাৎ করে হয়নি। বাঙালির দীর্ঘদিনের আত্মানুসন্ধান, দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও সংগ্রামের অমোঘ পরিণতি হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। আর একটি বড় সাফল্য ছিল স্বাধীনতার স্বল্পসময়ের মধ্যে ১৯৭২ সালে জাতিকে একটি সংবিধান উপহার দেয়া। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল আমাদের সংবিধানের মূলনীতি। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার এই সংবিধানে সংরক্ষিত হয়েছিল। সংবিধানের মূলনীতিগুলোর ভিত্তিতে তিনি একটি শোষণমুক্ত, অসামপ্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। একজন ছাত্রনেতা মুজিব থেকে তিনি হয়েছেন জাতির জনক। এটাই ইতিহাসের স্বাভাবিক ধারা। ইতিহাসে এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। আসলে জাতির মুক্তিসংগ্রামে নেতা একজনই। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষেত্রেও তাই। দীর্ঘ আপসহীন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরঙ্কুশ জনসমর্থন এবং সর্বোপরি জাতির ক্রান্তিলগ্নে ঐতিহাসিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তিনি পরিণত হয়েছিলেন এ জাতির অবিসংবাদিত নেতায়।
হাজার বছর যাবৎ এ দেশের জনগণের ওপর চলে আসা অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ, বঞ্চনা আর দুঃখ-কষ্টের অনুভূতি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির পথরেখা অঙ্কন করে দিয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি ও গণতন্ত্রের মানসপুত্র, কিংবদন্তির মহানায়ক। যার সুদীর্ঘ আত্মত্যাগ, আন্দোলন, কারাবরণ, সংগ্রাম ও নেতৃত্বের ফলে বাঙালি জাতি তাদের নিজস্ব একটি আবাসভূমি―একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছে। তাই শেখ মুজিব শুধু একজন মানুষের নাম নয়, তিনি একটি ইতিহাস, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। একটি দেশের নাম। একটি ভূ-খণ্ডের নাম। একটি মানচিত্রের নাম। একটি জাতির নাম। একটি মুক্তির পথ, একটি বিশ্বাসের নাম। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ।
লেখক : উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। কথাসাহিত্যি ও গবেষক।












