চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩৬ টাকার ১৪৩ টন পেঁয়াজ আজ প্রকাশ্য নিলামে তোলা হচ্ছে। সকাল ও দুপুরে দুই লটে এসব পেঁয়াজ নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। প্রকাশ্য নিলামে পেঁয়াজ কিনতে চাইলে বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) দরমূল্যের ওপর ২০ শতাংশ পে অর্ডার জমা দিতে হবে। এছাড়া নিলামে অনুমোদন পাওয়া সর্বোচ্চ দরদাতাকে মূল্যের ওপর সরকার নির্ধারিত ১০ শতাংশ হারে আয়কর এবং ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও জামানাতের বাইরের অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে দ্রুত পণ্য খালাস করতে হবে।
জানা গেছে, পচনশীল পণ্যের দ্রুত নিলাম আয়োজনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থায়ী আদেশ জারি করে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিগত সময়ে অনেক খাদ্যপণ্য পচে যাওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাওয়া দূরে থাক, উল্টো পণ্য ধ্বংসে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পচনশীল পণ্যসহ নিলামযোগ্য পণ্যের নিলাম দ্রুততার সাথে কার্যকর করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বিডাররা বলছেন, নিলামে এখনো কিছু ভোগান্তি রয়ে গেছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে–পণ্য অনুমোদন দিতে বিলম্ব করা। এতে বিডারদের পে অর্ডার মাসের পর মাস আটকে থাকছে। দ্রুততার সাথে পণ্যের বিক্রয় অনুমোদন দিলে কাস্টমস ও বিডার উভয়পক্ষের জন্য ভালো হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এয়াকুব চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ১৪৩ টন পেঁয়াজ প্রকাশ্য নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। প্রকাশ্য নিলামে পণ্য দ্রুত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এতে চট্টগ্রাম কাস্টমসেরও প্রক্রিয়াগত জটিলতা কমছে। পচনশীল পণ্য যত দ্রুত বিক্রি করা যায়, তত ভালো। তাই চট্টগ্রাম কাস্টমসের প্রকাশ্য নিলামের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাধ জানাই। আমরা চাই–চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে পচনশীল খাদ্যপণ্য এবং যেসব মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো যেন দ্রুত নিলামে তোলে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।