শরীফুল ইসলামের বয়স মাত্র ১২ বছর। বয়স যখন তার সাত বছর, তখন একদিন দুষ্টুমির ছলে কুমিল্লার লাকসাম থেকে ট্রেনে চেপে চলে আসে চট্টগ্রামে। ছোট্ট নিষ্পাপ শিশু শরীফ হাত পেতে এর ওর থেকে টাকা নিয়ে কিছু খেতো, বাকিটা জমাতো। স্টেশনের ফুটপাতেই কাটতো তার রাত। মাত্র পাঁচ বছরে সেই শিশুটিই হয়ে উঠে দক্ষ মোবাইল চোর। নতুন নাম হয় তার ‘ঢাকাইয়্যা’। এই নামেই রেল স্টেশন থেকে নিউমার্কেট হয়ে রিয়াজউদ্দিন বাজার আমতল পর্যন্ত মোবাইল চোরের জগতে সে পরিচিতি পায়। বয়স কম হওয়ায় তাকে নিয়ে পুলিশ পড়েছে বিপাকে। তার বিরুদ্ধে মামলাও দেওয়া যায় না। জেলেও পাঠানো যায় না। সংশোধনাগারে পাঠালে বের হয়ে ফিরে যায় পুরনো জগতে। মোবাইল চুরির জগতে সে এতটাই পরিচিতি পেয়েছে যে, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে কীভাবে হাওয়া হয়ে যেতে হয় সে ব্যাপারে তার চেয়ে বয়সে সিনিয়র অনেকেও এখন তাকে গুরু মানে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ মহসীন আজাদীকে বলেন, আগেরবার ছিনতাইয়ে ধরা খেয়ে গাজীপুর কিশোর সংশোধনাগারে ছিল ঢাকাইয়্যা শরীফ। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে দুই দিনের মাথায় ১৪ অক্টোবর বুধবার আবার ছিনতাই করে আটক হয় পুলিশের হাতে। আদালতের আদেশে ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার শরীফুল ইসলাম সজীব ওরফে ঢাকাইয়্যাকে তার আরেক সহযোগী কুমিল্লা মুরাদ নগরের মোতাহের হোসেনের ছেলে রনিসহ গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া এজাহার সূত্রে জানা যায়, হালিশহর এলাকার বাসিন্দা আরজাহান আরজু মঙ্গলবার দুপুরে রিয়াজউদ্দিন বাজার আমতল থেকে নিউ মার্কেট মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে জহুর হকার্স মার্কেটের সামনে এলে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে এক কিশোর তার দুই সহযোগীসহ তিন দিকে দৌঁড় দেয়। তিনি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ বুধবার রাতে মোবাইল সেট উদ্ধারের পাশাপাশি ঢাকাইয়্যা শরীফ ও রনিকে গ্রেপ্তার করে। ছিনতাই হওয়া এম আই নোট-এইট ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনটির দাম ১৭ হাজার টাকা। ঢাকাইয়্যা শরীফ ও রনি ফোনটি মাত্র চার হাজার টাকায় বিক্রি করে। ছয় হাত ঘুরে ফোনটির দাম উঠে ছয় হাজার টাকা। রেল স্টেশনের চোরাই মোবাইল মার্কেট থেকেই ফোনটি উদ্ধার করা হয়।