চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়কের ১৩ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের দুটি প্যাকেজের কাজ গত জানুয়ারিতে শুরু হয়েছিল। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ১৩ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজের মেয়াদ ছিল ৬ মাস (গত জুন পর্যন্ত)। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কের কাজ অনেক এগিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এখন বিটুমিনের কাজ বাকি। অন্যান্য কাজ মোটামুটি হয়ে গেছে।
দুটি প্যাকেজের মধ্যে মোহরা কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হাটহাজারী মদুনাঘাট পর্যন্ত সড়কের পাশে পিডিবির ১১৩টি বৈদ্যুতিক পোল এখন সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ১১৩টি বৈদ্যুতিক পোল সরানোর জন্য পিডিবি ৩ কোটি টাকা চেয়েছে। পিডিবির এই টাকা পরিশোধের অনুমতির জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে মন্ত্রণালয়ে (সড়ক ও জনপথ বিভাগে) চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর পিডিবিকে এই টাকা প্রদান করা হলে তারপর তারা রাস্তার পাশ থেকে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরিয়ে দিবেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক প্রশস্তকরণের দুটি প্যাকেজে কাজ করছে আব্দুস সালাম এন্ড আর এন ইয়াকুব জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বর্ষার ভারী বৃষ্টিপাত এবং সড়কের পাশজুড়ে অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটির কারণে কাজ বিলম্ব হলেও বৃষ্টি বন্ধ হলে এবং বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরানো হলে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না বলে জানান সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম–কাপ্তাই সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ দুটি প্যাকেজে চলছে। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পৌনে ৫ কিলোমিটার এবং মদুনাঘাট থেকে রাউজান ধরের টেক পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। সড়কের কাজ অনেক এগিয়েছে। এখন বিটুমিনের কাজ বাকি। অন্যান্য কাজ মোটামুটি হয়ে গেছে। এখন বৃষ্টির জন্য আটকে আছে। বর্ষায় ঠিকাদারকে কাজ না করতে বলেছি। কারণ বর্ষায় ঠিকভাবে কাজ করা যাবে না। সড়কে বিদ্যুতের পোলগুলোর কারণেও কাজ কিছুটা আটকে আছে। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত ১১৩টি বিদ্যুতের পোল রয়েছে। বিদ্যুতের পোলগুলো সারানোর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে লিখেছি। পিডিবি তাদের তাদের ডিমান্ড দিয়েছে (বিদ্যুতের পোলগুলো সারানোর জন্য ব্যয়ের টাকা)। সেটা আলোচনা চলছে। তাদের টাকাগুলো পরিশোধ করলে তারা বিদ্যুতের পোলগুলো সরিয়ে দিবে।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন আজাদীকে জানান, কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হাটহাজারীর মদুনাঘাট হয়ে রাউজান নোয়াপাড়া গশ্চি ধরেরটেক পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কের দুটি প্যাকেজের মধ্যে মদুনাঘাট পর্যন্ত বিদ্যুতের পোলের সংখ্যা বেশি। মদুনাঘাট পর্যন্ত ১১৩টি বিদ্যুতের পোল রয়েছে। এই ১১৩টি বিদ্যুতের পোল সরানোর জন্য পিডিবি ৩ কোটি টাকা চেয়েছে। আমরা টাকা প্রদানের অনুমতির জন্য আমাদের মন্ত্রণালয়ে (সড়ক ও জনপথ বিভাগে) পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে পিডিবিকে এই টাকা প্রদান করা হবে। তখন তারা রাস্তার পাশ থেকে বিদ্যুতের খুঁটি গুলো সরিয়ে দিবেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতর চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হাটহাজারী মদুনাঘাট পর্যন্ত একটি প্যাকেজে পৌনে পাঁচ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ৫ ফুট করে ১০ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। এখানে নজুমিয়াহাট এলাকায় ২০০ মিটার ২০ ফুটের বিদ্যমান সড়কের উভয় পাশে আরও ১৫ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। অপর প্যাকেজে মদুনাঘাট থেকে রাউজান গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত সাড়ে আট কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ৫ ফুট করে ১০ ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। দুটি প্যাকেজের মধ্যে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পৌনে ৫ কিলোমিটার একটি প্যাকেজের ব্যয় ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মদুনাঘাট থেকে গশ্চি ধরের টেক পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণে ব্যয় ২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।