১১শ টাকার চিড়া বিক্রি হচ্ছিল দুই হাজারে, সেনার উপস্থিতিতে ১৩৫০

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ত্রাণ কেনার হিড়িক, বাড়ছে দাম

জাহেদুল কবির | শনিবার , ২৪ আগস্ট, ২০২৪ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ কেনার হিড়িকের মাঝে ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারী বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জে বেড়েছে কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে গতকাল দুপুরে দিকে চাক্তাই এলাকার ভাঙ্গারপুলে উত্তরায়ন ট্রেডার্স নামে একটি দোকানে ২৫ কেজি ওজনের চিড়া ২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। অথচ বন্যার আগে প্রতি বস্তা চিড়া বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। তবে কয়েকজন ক্রেতা সেনা সদস্যদের খবর দিলে মজুদ করা ১২০ বস্তা চিড়া ১ হাজার ৩৫০ টাকা করে বিক্রির নির্র্দেশনা দেয়া হয়। সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতেই ক্রেতারা চিড়া কিনে নিয়ে যান। একই অবস্থা মুড়ির বাজারেও। দুইদিন আগে প্রতি কেজি মুড়ি বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। গতকাল সেই মুড়ি বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা এবং আলু বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়। অপরদিকে ভারত, পাকিস্তান ও মিশরের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ ১০৫ টাকা, পাকিস্তান ৯০ টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রাম, ফেনী এবং কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার প্রভাবে ঢাকাচট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন উপসড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। প্রচুর পরিমাণ পণ্যবাহী ট্রাক মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে আটকে আছে। তাই পণ্যের সরবরাহ সংকট রয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমার কারণে আসলে কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে।

গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জে ত্রাণ কিনতে যাওয়া কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে যখন সংকটকাল চলে, তখন একশ্রেণির পণ্যের মজুদদার ব্যবসায়ী ক্রেতাদের পকেট কাটায় ব্যস্ত থাকে। ফেনী, মীরাসরাই, হাটহজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলার বন্যা স্মরণকালের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উদ্ধার কার্যক্রমে সাধারণ মানুষও ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের কষ্ট দেখে দেশের বিবেক সম্পন্ন কোনো মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারছে না। সেই বিবেকবোধ থেকে আমরা নিজেরা টাকা তুলে হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির বন্যা দুর্গতদের জন্য কিছু ত্রাণ কিনতে এসেছি। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করলাম, আমরা ব্যবসা করার জন্য পণ্য কিনছি না, বন্যার্তদের সহায়তার জন্য পণ্য কিনছি। দাম একটু রাখিয়ে রাখেন। দাম কমানো দূরের কথা, উল্টো অনেক পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বেশি নিয়েছেন।

জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আসলে পণ্যের দাম নির্ভর করে চাহিদা ও যোগানের ওপর। খাতুনগঞ্জে পণ্যবাহী ট্রাক আসতে পারছে না, তাই সরবরাহ ব্যবস্থা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই বাজারেও প্রভাব পড়ছে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, বাজারে বেচাবিক্রি কম। পণ্য আসতে পারছে না। বিশেষ করে পেঁয়াজের বাজার বাড়তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আব্দুল হাফিজ
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬