১০ লাখ গাজাবাসীকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় সরানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের

উত্তর গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত প্রায় ১০০

| রবিবার , ১৮ মে, ২০২৫ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়ায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে নিউ ইয়র্কভিত্তিক এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ত্রিমুখী হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাসপরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি ও স্থানীয় অধিবাসীরা। স্থল, আকাশ ও সমুদ্র পথে ইসরায়েল হামলা চালায়। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, অন্তত ৯ টি বাড়ি এবং বেসামরিক নাগরিকদের তাঁবুর আশ্রয়স্থলে বৃহস্পতিবার রাতে বোমা হামলা হয়। এর বিনিময়ে উত্তর আফ্রিকার দেশটির জব্দ করা অর্থ ফেরত দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে, বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত কয়েক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে এনবিসি নিউজ। ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনাটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের গভীর বিবেচনায় রয়েছে এবং এ নিয়ে লিবিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথাও হয়েছে, জানিয়েছেন পাঁচ কর্মকর্তা। এক দশকেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার কয়েকশ বিলিয়ন ডলারের তহবিল জব্দ করেছিল, সেটি ছাড় করার বিনিময়ে তারা ফিলিস্তিনিদের দেশটিতে স্থানান্তরের কথা ভাবছে, ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনজন এনবিসিকে এমনটাই বলেছেন। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সমঝোতা হয়নি, তবে লিবিয়ার সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি ইসরায়েলকে অবহিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা এই খবরকে অসত্য অ্যাখ্যা দিয়েছেন। মাঠের এখন যা পরিস্থিতি তাতে এমন পরিকল্পনা মোটেও বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়নি, এবং এটা একেবারেই অর্থহীন, বলেছেন তিনি। গাজার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের লিবিয়ায় সরিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত কোনো আলোচনার ব্যাপারে তিনি অবগত নন। গাজা ও গাজাবাসীসহ ফিলিস্তিনিদের নিয়ে কী হবে আর কী হবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র ফিলিস্তিনিদেরই রয়েছে, এনবিসিকে বলেছেন বাসেম নাইম। কাগজপত্রহীন লাখো অভিবাসন প্রত্যাশীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার অঙ্গীকার করে জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া ট্রাম্প এখন অভিবাসন প্রত্যাশীদের লিবিয়াসহ তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন বলে চলতি মাসে একাধিক মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে খবর বেরিয়েছিল।

তবে লিবিয়ার জাতীয় ঐক্য সরকার (জিএনইউ) তাদেরকে না জানিয়ে বা তাদের সম্মতি ছাড়া বিতাড়িত অভিবাসন প্রত্যাশীদের গন্তব্য হিসেবে লিবিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহারের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা হয়নি বলেও জানিয়েছে তারা। ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ট্রাম্প বারবারই বলে আসছেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিশর বা জর্ডানের মতো কাছাকাছি কোনো আরব দেশে স্থানান্তর করা উচিত।

জর্ডান, মিশরের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি নেতারাও এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রেরই গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া উচিত। তিনি গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দাকে অঞ্চলটির অন্য কোনো দেশে সরিয়ে ভূখণ্ডটিকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা বানানোর পরিকল্পনার কথাও সেসময়ই উচ্চারণ করেছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাঁদের দুইদিক এত আলাদা দেখায় কেন?
পরবর্তী নিবন্ধনিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের নাটকীয় হার