কি টেস্ট কিংবা ওয়ানডে, তামিম যেন নিজেকে অনেকটাই বদলে ফেলেছিলেন। কিন্তু গতকাল শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে তামিমকে দেখা গেল সেই চেনাজানা তামিম রুপে। তামিমের ব্যাটিং দেখে বুঝার কোন উপাই ছিলনা তামিম কি টেস্ট খেলছেন নাকি ওয়ানডে। যতটা সুন্দর ছিল ইনিংসের শুরুটা তার শেষটা হলো তার চাইতেও বেশি হতাশার মধ্য দিয়ে। নান্দনিক সব শটের মহড়ায় যে ইনিংস এগিয়ে যাচ্ছিল শতরানের কাঙ্খিত ঠিকানার দিকে সেই দৃষ্টি নন্দন ইনিংসটি শেষ হলো দৃষ্টিকটু এক শটে। দারুণ খেলেও নিজের বাজে শটে সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেন তামিম ইকবাল। শ্রীলংকার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে তামিম আউট হন ৯০ রানে। বাংলাদেশের রান তখন ২ উইকেটে ১৫২। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ শক্ত ভিত পায় এই তামিমের ব্যাটেই। শুরুতেই সাইফ হাসানকে হারালেও তা বুঝতে দেননি তামিম। শুরু থেকেই দারুন সব শটের প্রদর্শনীতে তিনি এলোমেলো করে দেন শ্রীলংকান পেসারদের। ৫৩ বলে তামিম স্পর্শ করেন ২৯তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি। লাঞ্চ বিরতিতে যান ৬৫ রান নিয়ে। লাঞ্চের পরও দারুন সব শট খেলে ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। উইকেটের চারপাশে শট খেলে বাড়াতে থাকেন রান। অপেক্ষা যখন তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরির, তখনই করে বসেন ‘আত্মহত্যা।’ বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টিয়ার করার চেষ্টা করেন। বল একটু বেশি লাফিয়ে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় স্লিপে দাড়ানো ফিল্ডারের হাতে। হতাশায় নুয়ে পড়েন তামিম। কিন্তু তখন আর কিছুই করার নেই। ১০১ বলে ১৫ চারের অনিন্দ্য সুন্দর এক ইনিংসের সমাপ্তি। সে সাথে ভাঙ্গে শান্তর সঙ্গে ১৪৪ রানের জুটি। দেশের বাইরে প্রায় ১২ বছর পর যেটি দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের শতরানের জুটি। সবশেষ ছিল ২০০৯ সালের জুলাইয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে তামিম ও জুনায়েদ সিদ্দিকের ১৪৬। প্রায় দুই বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে তা হারালেন তামিম। টেস্ট ক্রিকেটে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলেও এখনো সেঞ্চুরির দেখা পাননি তামিম।
সে সুযোগটা হাতের মুঠোয় পেয়েও হারালেন টাইগারদের ওয়ানডে দলপতি। টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলংকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি নেই তামিমের। সেখানে শ্রীলংকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিটা পাওয়ার সুবর্ন সুযোগটা হাতছাড়া করলেন তামিম একেবারে নিজের অবহেলায়। ফলে দিন শেষে বাংলাদেশ উদ্ভাসিত হলেও হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে তামিমকে।