তৃতীয়বারের মত আইপিএলের শিরোপা জিতল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১২ এবং ২০১৪ সালে বিশ্বের সবচাইতে দামি এই ফ্রাঞ্জাইজি ক্রিকেট লিগের শিরোপা জিতেছিল কলকাতা। ২০২১ সালে ফাইনালে গেলেও সেবার আর শিরোপা জেতা হয়নি। প্রায় দশ বছর পর আবার আইপিএলের ট্রফি গেল শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্সের ঘরে। গতকাল চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইপিএলের ফাইনালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় কলকাতা। এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত একটি দল ছিল হায়দ্রাবাদ। প্রতিটি ম্যাচেই রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে তারা। কিন্তু ফাইনালে গিয়ে রানের দেখা পেল না দলটি। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে মাত্র ১১৩ রানে থামে হায়দ্রাবাদের ইনিংস। অথচ আড়াইশ রান টপকে জিতেছিল এই দলটি। কলকাতা অবশ্য এবারের আসরের শুরু থেকে দারুণ খেলেছে। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে শিরোপা জিতে লম্বা এই জার্নি শেষ করল শাহরুখের দল। কলকাতার বোলাররা শুরু থেকেই চেপে ধরেছিল হায়দ্রাবাদের ব্যাটারদের। যা পরে কলকাতার ব্যাটারদের জন্য সহজ হয়ে যায়। দীর্ঘ পথ চলায় এবারের আইপিএলে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হলে ফাইনালটা হলো একেবারে একপেশে। যাতে কলকাতার সামনে উড়ে গেল হায়দ্রাবাদ।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে। প্রথম ওভারেই ফিরেন ওপেনার অভিষেক শর্মা। দ্বিতীয় ওভারে ফিরে আরেক ওপেনার ট্রেভিস হেড। পঞ্চম ওভারে ফিরলেন রাহুল ত্রিপাটি। ২১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুকছে হায়দ্রাবাদ। চতুর্থ উইকেটে ২৬ রান করেন মার্করাম এবং রেড্ডি। ১৩ রান করা রেড্ডিকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন হারশিত রানা। দলকে ৬২ রানে রেখে ফিরেন মার্করাম। এই প্রোটিয়ার ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। আরেক প্রোটিয়া ব্যাটার হেনরিক ক্লাসেন চেষ্টা করলেও ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর দ্রুত ফিরেন শাহবাজ আহমেদ এবং আবদুল সামাদ। ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় হায়দ্রাবাদ। তখন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন পেট কামিন্স। কিন্তু অপরপ্রান্তে উনাদকাট ফিরলেন ৪ রান করে। প্যাট কামিন্সকে ফিরিয়ে হায়দ্রাবাদের ইনিংসের ইতি টানেন আন্দ্রে রাসেল ১১৩ রানে। ১৯ বলে ২৪ রান করেন এই অস্ট্রেলিয়ান। যা সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ইনিংসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে ১৯ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক এবং হারশিত রানা।
জবাবে ব্যাট করতে নামা কলকাতা নাইট রাইডার্স দ্বিতীয় ওভারেই সুনিল নারাইনকে হারায়। ৬ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ার মিলে ৪৫ বলে ৯১ রান যোগ করেন। আর তাতেই কলকাতার জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ৩২ বলে ৩৯ রান করে ফিরেন গুরবাজ। ভেঙ্কটেশ আইয়ার তুলে নেন তার হাফ সেঞ্চুরি। মাত্র বলে ৪টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। পুরো ৫৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় নিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ভেঙ্কটেশ আইয়ার অপরাজিত ছিলেন ২৬ বলে ৫২ রান করে। ৩ বলে ৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার।