ক্যান্সার আক্রান্ত মা হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায়। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গেছে অনেক টাকা। এখন মাকে বাঁচাতে কলেজপড়ুয়া ওই সন্তান ১০ বছরের জন্য শ্রমিক হিসেবে নিজেকে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার এই আবেদন ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতিমধ্যে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তার মায়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তা দেয়া শুরু করেছে। বান্দরবান সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ারুল ইসলাম মামুন। গত বৃহস্পতিবার নিজেকে শ্রমিক হিসেবে ১০ বছরের জন্য বিক্রির ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন মাস আগে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদর ইউনিয়নের পান বাজার এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা মো. নুরুল ইসলামের স্ত্রী খালেদা বেগমের জরায়ু ক্যান্সার ধরা পড়ে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক এম এ আউয়ালের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কেমোথেরাপি দেয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালে খালেদা বেগমের সারা শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। এতে শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়। তার একমাত্র ছেলে সন্তান আনোয়ারুল ইসলাম মামুন পরিবারের সহায়-সম্বল বিক্রি করে মায়ের জন্য ইতোমধ্যে ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছেন।
মামুন গতকাল রাতে আজাদীকে জানান, পরিবারে আমি একমাত্র ছেলে। আমি গরিব ঘরের সন্তান। আমার মায়ের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা নিঃস্ব। শেষ চেষ্টায় হিসেবে সিলেটের একটি ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু এ চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। কোন উপায় না দেখে শেষমেষ আমি নিজেকে ১০ বছরের জন্য শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছি ফেসবুকে। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার মায়ের জন্য সহযোগিতা করেন তাদের কাছে চির ঋণী থাকব। আবেগ তাড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, কেউ যদি আমাকে শ্রমিক হিসেবে কিনে নিতে চান তাদের কাছে আমি বিক্রি হবো।












