তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে প্রাণঘাতী হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও ওলামা সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছেন তাবলিগ জামায়াতের জুবায়েরপন্থিরা। গতকাল শনিবার ঢাকার কাকরাইল মসজিদে এক সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থি হিসেবে পরিচিত মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, আগামী ১০ জানুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও ২৫ জানুয়ারি আলেমদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন করা হবে। খবর বিডিনিউজের।
‘ওলামা–মাশায়েখ বাংলাদেশ এবং দাওয়াত ও সাথিবৃন্দ’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ৩১ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ের ইজতেমা হচ্ছে; এতে কোনো বাধা নেই। পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। দ্বিতীয় পর্বের যে ঘোষণা, ১৭ ডিসেম্বরের পরে সেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সেদিন হত্যাকাণ্ডের পরে যাদের হাত মুসল্লিদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে; তাদের আসলে সেখানে ইজতেমা করার কোনো নৈতিক অধিকার থাকে না। মামুনুল হক বলেন, যদি হত্যাকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে তারা কীভাবে ইজতেমা করে, সেটা প্রশাসনের কাছে আমরা জানতে চাই।
গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীদের সংঘর্ষে হয়। তাতে নিহত হন অন্তত তিনজন; আহত হন বেশ কয়েকজন। সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা সাদ কান্ধলভির সমালোচনা করে নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, দাওয়াত ও তবলীগের সুন্দর দ্বীনি মেহেনতটি ভারতের সাদ সাহেবের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বহুদিন থেকে সমস্যায় জর্জরিত। তার অন্ধ অনুসারীদের উগ্রতা ও বিশৃঙ্খলার কারণে প্রশাসনের নানা উদ্যোগের পরও সমস্যা মেটেনি।
তিনি বলেন, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের হত্যাকাণ্ডসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। দাবি পূরণে যদি সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ ও আশানুরূপ অগ্রগতি লক্ষ্য করা না যায়, তাহলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ওলামা সম্মেলন থেকেই আলেমরা ঘোষণা করবেন।
এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, কোনো ব্যক্তির ওপর নয়, সাদপন্থিদের সামষ্টিক সাংগঠনিক যে কার্যকলাপ, সেটাকে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৭ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে সব আলোচনার দুয়ার রুদ্ধ করে আমাদের তিন ভাইকে হত্যা করা হল। এখন রক্তের ওপর দিয়ে কীভাবে তাদের সঙ্গে আলোচনায় যেতে পারি?