সাতকানিয়া–লোহাগাড়াকে আদর্শ, বাসযোগ্য জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শুরু থেকে উদ্যোগ নিয়েছেন উল্লেখ করে আগামী ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কাজের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রাম–১৫ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় এবং নিজের সংসদীয় এলাকায় ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা উপলক্ষে গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এম এ মোতালেব বলেন, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় প্রধান রাস্তাসমূহ মেরামত এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য আগামী ১০০ দিনের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করেছি। উন্নয়নমূলক কাজের মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় পিছিয়ে পড়া অবকাঠামোসমূহের উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। সাতকানিয়া–লোহাগাড়াকে শান্তির জনপদে পরিণত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, অপরাধীদের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস করা যাবে না। প্রশাসনকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে কোনো পক্ষপাতিত্ব বা শিথিলতা দেখানো যাবে না। আগে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
তিনি বলেন, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় শান্তিপূর্ণ ও সহাবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী কোনো সহিংসতা যাতে না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যদি কেউ নির্বাচনোত্তর সহাবস্থান বিনষ্ট করে নিজেদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিরোধ নির্বাচনের আড়ালে মিটাতে চান, তাদের কোনো দায় আমি নেব না। পুলিশ প্রশাসনকেও তা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি ও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেছি।
সাতকানিয়া–লোহাগাড়াকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে মাদক ব্যবসায়ী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের তালিকা তৈরি করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে উল্লেখ করে এম এ মোতালেব বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সাঁড়াশি অভিযান চালানোর জন্য প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বালু মহাল নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের লাগাম টানা হবে জানিয়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন ও দখলবাজ সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনা হবে। অবৈধ বালু উত্তোলন সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় যেকোনো মূল্যে বন্ধ করা হবে। স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা আনার জন্য সরকারি–বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকসমূহে সেবার মান বাড়ানো হবে।
নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও তার স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রমাগত মিথ্যাচার শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেন এম এ মোতালেব। তিনি বলেন, তারা দশ বছর এলাকায় নানা অত্যাচার ও জুলুম করেছেন। তাদের সঙ্গে অনেকের অবৈধ লেনদেনের সম্পর্ক আছে। এসব তাদের ব্যক্তিগত ঝামেলা। এসব ঝামেলা থেকে বাঁচতে তারা সব দায় নির্বাচনী চাদরে ঢেকে আমার ওপর তুলে দিতে চাইছেন। নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে এখন তারা সংবাদমাধ্যমে অসত্য রিপোর্ট করাতে সচেষ্ট। আমরা দলমত নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এম এ মোতালেবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, সদস্য সচিব ও সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সাতকানিয়া অংশের চেয়ারম্যান ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আহমদ সাইফুদ্দিন সিদ্দিকী, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ আহমদ লিটন, মো. জসিম উদ্দিন, সাতকানিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল গফুর লালু, সাতকানিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মধ্যে মোহাম্মদ আবু সালেহ, মো. সেলিম, রমজান আলী, জসিম উদ্দিন, রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন, মোজাম্মেল হক, সাতকানিয়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সিকদার, নাজিম উদ্দিন, আমির উদ্দিন চৌধুরী, রিদুয়ানুল হক, আলাউদ্দিন মো. সাবের, রফিকুল ইসলাম, মোর্শেদ আলম ও সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী।