জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম চার ম্যাচে টানা জিতলেও এক ম্যাচেও আধিপত্য বজায় রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দাপটের সাথে জয় বলতে যা বুঝায় সেটা দেখাতে পারেনি টাইগাররা। তার উপর বিশ্বকাপের আগে নিজেদের প্রস্তুত করতে জিম্বাবুয়েকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা হলেও প্রস্তুতিটা সেভাবে হয়নি।
উল্টো সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত দাপটে জিতেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ টানা চারটি ম্যাচ জিতলেও পারফরম্যান্সে পড়েনি প্রত্যাশার প্রতিফলন। ব্যাটে–বলে ঘাটতির জায়গা ছিল অনেক, জয়ের ধরণে ছিল অস্বস্তি। শেষ ম্যাচে তাই দলের কাছে চাওয়া ছিল পারফরম্যান্সের পূর্ণতা। কিন্তু হলো উল্টো। ব্যাটে–বলে যে দাপট আর বড় জয় প্রত্যাশিত ছিল বাংলাদেশের কাছে, ঠিক সেভাবেই জিতে গেল জিম্বাবুয়ে। সিরিজের শেষ ম্যাচে সিকান্দার রাজার দল জয় পায় ৮ উইকেটে। বাংলাদেশকে ১৫৭ রানে আটকে রেখে জিম্বাবুয়ে জিতে যায় ৯ বল বাকি রেখেই। ফলে হোয়াইটওয়াশ করা হলো না জিম্বাবুয়েকে । সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়া সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান এবার পারেননি জুটি জমিয়ে তুলতে। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই মুজারাবানি ফেরান ২ রান করা তানজিদকে। পরের ওভারে বেনেটের অফ স্পিনে পয়েন্টে ক্যাচ ধরা পড়েন ৭ বলে ৭ রান করা সৌম্য। বেনেট পরের ওভারে ফেরান সিরিজে বাংলাদেশের সবচাইতে সফল ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়কে। ৬ বলে ১ রান করেন তিনি। বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে। তখন দলকে টানেন মাহমুদউল্লাহ। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। রানে ফিরবেন তেমনটা যখন ভাবা হচ্ছিল তখনই ২৮ বলে ৩৬ রান করে ফিরেন শান্ত। এরপর সাকিবও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে।
শন উইলিয়ামসের বলে একটি ছক্কা মারলেও সাকিব পরে আউট হন ১৭ বলে ২১ রান করে। মাহমুদউল্লাহ তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৩৬ বলে আসে তার ফিফটি। কিন্তু ইনিংসকে গতি দিতে পারেননি এরপর। একসময় ২৬ বলে তার রানছিল ৪৩। পরের ১৮ বলে রান করতে পেরেছেন মাত্র ১১। ৪৪ বলে ৫৪ রান করে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর বাংলাদেশের ইনিংসকে ১৫৭ তে নিয়ে গেছেন জাকের আলি। দুইটি ছক্কায় ১১ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের।
১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটা হয় বেনেটের ঝড় দিয়ে। পাওয়ার প্লেতে শেখ মেহেদির দুই ওভারে তিনটি চার দুটি ছক্কা মারেন তিনি। চার ওভারে জিম্বাবুয়ে তোলে ৩৮ রান। তাতে বেনেটের রানই ছিল ৩৬। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন সাকিব। তবে কে জানতো এরপর আরো বড় বিপদ আসতে যাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য। সিকান্দার রাজাকে সঙ্গী করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে বেনেট। ১০ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ৬২। পরে রান বাড়তে থাকে দ্রুত। বেনেট হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৬ বলে।
অপরদিকে সিকান্দার রাজা শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও পরে সাইফ উদ্দিনের টানা দুই বলে মারেন ছক্কা ও চার। রিশাদের এক ওভারে ছক্কা মারেন দুজনই। শুরু হয় জিম্বাবুয়ের রানের জোয়ার। দুজনের ব্যাটে শতরান পেরিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এই জুটি ভাঙে ১৫ ওভার পেরিয়ে। সাইফ উদ্দিনের শর্ট বল রিশানের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেনেট ফিরেন ৪৯ বলে ৭০ রান করে। মেরেছেন ৫টি চার এবং ৫টি ছক্কা। এরপর জিম্বাবুয়ের জিততে কোনো সমস্যা হয়নি। দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেন সিকান্দার রাজা। ৪৬ বলে ৬টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন সিকান্দার রাজা। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচের সেরা হন ব্রায়ান ব্রেনেট। শেষ ম্যাচে না খেললেও প্রথম চার ম্যাচে আট উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা তাসকিন আহমেদ।