বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকে ভরে গেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। পযটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এতে কোনো হোটেল–মোটেলে কক্ষ খালি নেই। যার ফলে বেড়াতে এসে অনেক পর্যটক হোটেলে কক্ষ না পেয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তা ও বাসে রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের। কক্সবাজার হোটেল–মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো হোটেলে কক্ষ খালি নেই। তাই অগ্রিম বুকিং না নিয়ে কক্সবাজারে আসায় অনেক পর্যটক কক্ষ না পেয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে কক্সবাজারে পর্যটকের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে পুরো পর্যটন নগরী। ১৬ ডিসেম্বর থেকে তিন লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। এসব পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির ও ইনানী পাথুরে সৈকতসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেন্টমার্টিনের হোটেল মালিক সমিতির নেতা আবদুল মালেক জানান, সেন্টমার্টিনেও বিপুল পর্যটক গমন করেছে। তাই কোনো হোটেলে আপাতত কক্ষ খালি নেই।
বিপুল পর্যটকের চাপে হোটেল–মোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং শুটকি, বার্মিজ পণ্যসহ অন্যান্য কেনাকাটার দোকানে দম ফেলার ফুরসত নেই। সবখানে বেচাকেনার ধুম পড়েছে; বিরাজ করছে মহা ব্যস্ততা। অন্যদিকে পর্যটকের চাপে হোটেল কক্ষের মতো স্থানীয় যানবাহন, রেস্টুরেন্টেও সংকট তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে অসাধু চালক ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনেক পর্যটক এই অভিযোগ করছেন।
বিপুল পর্যটকের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে যানজট সামলাতে গিয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তারপরও লিংক রোড থেকে হলিডে মোড় এবং পর্যটনজোন কলাতলীতে লেগে আছে তীব্র যানজট। টমটমের সাথে পর্যটকবাহী বাসগুলো যত্রযত্র পার্কিং করায় বিড়ম্বনা সৃষ্টি হচ্ছে।
পর্যটকসেবী সংগঠন ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার–টুয়াকের প্রধান উপদেষ্টা ও পর্যটন বিশেষজ্ঞ মুফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ পর্যটক বেড়াতে এসেছে একসাথে এত পরিমাণ পর্যটক গত দুই বছরে আসেনি।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব পর্যটন কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও টহল দিচ্ছে ১০টির বেশি দল।
কক্সবাজার পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন বলেন, হোটেল–রেস্টুরেন্টে অতিরিক্ত দাম আদায় এবং ছিনতাই নিয়ন্ত্রণসহ সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে কোনো ধরনের কার্পণ্য নেই। পর্যটকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।