হরতাল চলাকালে ব্রাক্ষণবাড়িয়া রেলস্টেশনসহ আশেপাশের এলাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের কারণে রেলওয়ের সবচেয়ে আধুনিক ও দ্রুতগামী ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত আধুনিক বগি থেকে শুরু করে ইঞ্জিন কিছুই বাদ যায়নি। প্রতিটি বগির গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
শুধু সোনার বাংলা নয়, হরতালকারীদের তাণ্ডবে বাদ যায়নি রেললাইন থেকে শুরু করে রেলস্টেশনও। রেললাইনের স্লিপার তুলে ফেলায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে কোনো ট্রেন আসতে পারেনি বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এদিকে নাশকতার আশঙ্কায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ আজ সোমবার সোনার বাংলা এক্সপ্রেস বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার পুরনো বগিতে চলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেলওয়ে চট্টগ্রাম স্টেশনের ম্যানেজার রতন কান্তি চৌধুরী আজাদীকে জানান, সোনার বাংলাসহ কোনো ট্রেন ঢাকা থেকে এখনো পর্যন্ত (রাত ১০টায়) চট্টগ্রামে আসেনি। সোমবার সোনার বাংলা বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার আগের বগিতে চলবে। এদিকে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট ও দোহাজারী রুটে সকল ট্রেন বন্ধ রয়েছে। হেফাজতের হরতালে পিকেটাররা ভাঙচুর করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। গতকাল সকালে প্রায় আধ ঘণ্টার তাণ্ডবে ভাঙচুর করা হয়েছে ট্রেনটির প্রায় ১১৭টি গ্লাস। এছাড়া ভেঙে দেওয়া হয়েছে ট্রেনের ইঞ্জিনের ৭ থেকে ৮টি গ্লাস। বাদ যায়নি সম্প্রতি যুক্ত হওয়া চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কোচগুলো। সব মিলিয়ে হরতালের জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ট্রেনটির। এতে বেশ ক’জন যাত্রী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছ থেকে জানা গেছে, সোনার বাংলা ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসছিল। তালশহর এলাকা অতিক্রম করার পর হরতাল সমর্থনকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে পরিস্থিতি এখনও থমথমে। রেললাইন জুড়ে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ। আপাতত ট্রেন চলছে না বলে জানান স্টেশন মাস্টার। এদিকে হেফাজতের তাণ্ডবের পর সোনার বাংলাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভৈরব বাজারের দিকে। সোনার বাংলা ছাড়াও অন্যান্য ট্রেন যাত্রী নিয়ে আটকে আছে।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক ৫টি যাত্রীবাহী ট্রেন। সকাল থেকে দুই ধাপে বিরতিতে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেনগুলো। সোনার বাংলায় তাণ্ডবের জেরে ৭০১ ঢাকাগামী সুবর্ণ এঙপ্রেস কসবা স্টেশনে অবস্থান করছে। ৭০৪ মহানগর প্রভাতী আমিরগঞ্জ স্টেশনে, ৭১১ ঢাকাগামী উপকূল আখাউড়া স্টেশনে, ৭১৭ সিলেটগামী জয়ন্তিকা নরসিংদী স্টেশনে, ৭১৮ ঢাকাগামী জয়ন্তিকা হরষপুর স্টেশনে, ৭৭৪ ঢাকাগামী কালনী আজমপুর স্টেশনে, ৭৮৫ ময়মনসিংহ গামী বিজয় মন্দবাগ স্টেশনে, ৮০১ ঢাকাগামী চট্টলা কুমিল্লা স্টেশনে এবং কর্ণফুলী নরসিংদী স্টেশনে অবস্থান করছে।