হেনরি গইন জেফ্রিস মোসলে (১৮৮৭–১৯১৫)। একজন ইংরেজ পদার্থবিদ। পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও তিনি রসায়ন বিজ্ঞানে প্রভুত সাফল্য অর্জন করেন। তিনি আণবিক সংখ্যার পূর্ববর্তী তত্ত্বীয় এবং রাসায়নিক ধারণার উন্নতি সাধনে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। এরই হাত ধরে এক্সরে বর্ণালীতে মোসলে সূত্রের আবির্ভাব ঘটে। মোসলে সূত্রানুসারে পর্যায় সারণীর অনেক মৌলকে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। তার এ গবেষণা কর্মের জন্য রসায়ন বিজ্ঞানে তিনি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। রসায়নবিদ আর্নেস্ট রাদারফোর্ড দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মোসলে পর্যায় আনবিক সংখ্যা নিয়ে গবেষণা কর্মে মনোনিবেশ করেন। মোসলে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত ওয়েমাউথ, ডরসেটে ২৩শে নভেম্বর ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মোসলের পিতা হেনরি নট্টিজ মোসলে একজন জীববিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ছিলেন। মোসলে তরুণ বয়সেই পিতাকে হারান। মোসলের মায়ের নাম আমাবেল জি. জে. মোসলে। মোসলের বাবার মৃত্যুর পরে আমাবেল অক্সফোর্ডের প্রাণীবিজ্ঞানের অধ্যাপক উইলিয়াম জনসন সোল্লাসকে বিয়ে করেন। মোসলে স্কুলে খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ট্রিনিটি কলেজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যয়ন করেন। অধ্যয়ন শেষে তিনি এটন মহাবিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য রাজা বৃত্তি লাভ করেন। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এটনে রসায়ন এবং পদার্থ পুরস্কার অর্জন করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক পাস করার পরে মোসলে স্যার আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের তত্ত্বাবধানে ডেমোনস্ট্রাটর পদে ম্যানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। পূর্ব ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের উৎপাত শুরু হলে মোসলে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ফেলে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর রাজকীয় প্রকৌশলীদের সাহায্য করতে ছুটে যান। মোসলে ব্রিটিশ সৈন্যদের সাথে টেলিকমিউনিকেশান কর্মকর্তা হিসেবে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে তুরস্কের গাল্লিপলিতে যান। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০শে আগস্ট গাল্লিপলির যুদ্ধে মোসলে নিহত হন। তখন তার বয়স ছিলো সাতাশ বছর। ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে মোসলে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কাররে জন্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই আগস্ট এই ক্ষণজন্মা বিজ্ঞানী মাত্র আটাশ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।