হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক

বোধি রঞ্জন চৌধুরী | মঙ্গলবার , ৯ জুলাই, ২০২৪ at ৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মানুষের একটা সহজাত প্রবৃত্তি হচ্ছে অপরের সাথে মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। একটা সুন্দর সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠার জন্য এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মানুষ পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং স্নেহমমতায় একে অপরের সাথে দৃঢ়বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বহু প্রাচীনকাল থেকে এই সামাজিক বন্ধন গড়ার মাধ্যমে মানুষ একটা নিরাপদ এবং নিশ্চিন্ত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। একে অপরের যেকোনো বিপদে আপদে সাধ্যমত নিজের সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রচলিত এই ব্যবস্থা বর্তমানে যেন দিনে দিনে ফিকে হয়ে আসতেছে। মানুষ যেন এককেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। সবসময় যেন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে। ক্ষেত্রবিশেষে কারো সান্নিধ্য যেন অসহনীয় লাগে। একটা নির্দিষ্ট গণ্ডীর মধ্যে নিজেকে নিয়ে থাকতে চায়। কখনো কারও প্রয়োজন নেই এই ধরনের মানসিকতা পোষণ করে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির সুলভতায় এবং সব চাহিদার সমাধান একটা ছোট্ট যন্ত্রের মাধ্যমে পাওয়া যায় এই ভাবনায় অপরের সান্নিধ্য এড়িয়ে চলে। নিজের পরিচিত আপনজন বা বন্ধুবান্ধব পরস্পর পাশাপাশি বসেও কথা বলার চেয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে। এতে করে একে অপরের মধ্যে একটা বিচ্ছিন্নতাবোধ গড়ে উঠছে এবং আমরা সামাজিক বন্ধনের দৃঢ়তা হারিয়ে ফেলছি। হ্যা বর্তমান আধুনিক যুগে যে কোনো কাজের জন্য মোবাইলের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তার যেন অতিব্যবহার বা অপব্যবহার না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। একটা সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থা বাঁচিয়ে রাখতে হলে মানুষের পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা বাড়াতে হবে। পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতাবোধ কোনোভাবেই কারো কাম্য হতে পারে না। আসুন আমরা সমাজের প্রত্যেকেই একে অপরের পাশে থেকে মনের যেকোনো ভাবনা, ধারনা পরস্পরের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটা স্বচ্ছ সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলি। হারিয়ে যাওয়া পূর্বের সমাজব্যবস্থা ফিরিয়ে আনি। একটা ছোট্ট যন্ত্র যেন কোনোভাবেই আমাদের পারস্পরিক হৃদ্যতা কেড়ে নিতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপোস্টার-ব্যানারে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি প্রসঙ্গে
পরবর্তী নিবন্ধকোটা সংস্কার সময়ের দাবি