প্রকৃতির অপরূপ রূপে সুসজ্জিত আমাদের এই বাংলাদেশ। বিধাতা যেন আপন সৌন্দর্যের মাধুরী মিশিয়ে সাজিয়েছেন আমাদের এই দেশকে। রুপের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি তাই বলে উঠেন, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’। বাংলার গ্রামগুলোর দিকে তাকালে বুঝা যায় কী অপূর্ব রূপের কারুকাজে সুসজ্জিত প্রকৃতির রূপসী কন্যা বাংলা। প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ ফুল ফসলের সুমধুর সুবাস, বিলে ঝিলে দিঘির স্বচ্ছ জলে শাপলা শালুকের ফুটে থাকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য গাছের ডালে ডালে পাখিদের কলকাকলি যেন হাতছানি দিয়ে ডাক দেয় মানুষকে। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকরা বাংলার রূপে মুগ্ধ হয়ে লিখে গেছেন গেয়ে গেছেন সৌন্দর্যের জয়গান। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আমাদের জাতীয় সংগীতে বাংলার যে রূপের বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে তাতেই বাংলার সৌন্দর্য যথার্থভাবে ফুটে উঠেছে। কবি অতি সাধারণ দৃশ্যগুলি যা আমরা প্রতিদিন দেখি সে দৃশ্যগুলিকে এত সুন্দর করে অপূর্ব মাধুরী মিশিয়ে শব্দের গাঁথুনি সুর তাল লয়ে সাজিয়েছেন এবং শিল্পী যখন দরদ মাখা কণ্ঠে গেয়ে উঠেন সাথে সাথে সে সুরের মোহনীয় যাদুস্পর্শে মনেপ্রাণে অপূর্ব শিহরণ জেগে ওঠে। চোখের সামনে ভেসে উঠে বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্যের সে অপরূপ রূপের ছবি। বাংলার সৌন্দর্যকে এত নিখুঁতভাবে কবিগুরু সাজিয়ে তুলেছেন তাতেই দেশের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের দেশপ্রেম আপনা আপনি জেগে উঠে। দেশের প্রতি মমত্ববোধ এবং ভালোবাসার উজ্জ্বল দীপশিখা হৃদয়মাঝে প্রোজ্বলিত হয়ে ওঠে। আমাদের জাতীয় সংগীতটাকে যদি আমরা মনেপ্রাণে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারি তবে বাংলার রূপটাকে জানতে পারব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সংগীতটার মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বলে কবিগুরুর এ গানটিকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। একজন নিঃস্বার্থ দেশদরদী প্রকৃত দেশপ্রেমিকের যথার্থ নির্বাচন। বঙ্গবন্ধু বলেই এ সংগীতটাকে জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। কারণ তাঁর হৃদয়ে ছিল বাংলাদেশ।