কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদী থেকে শ্যালোমেশিনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে চরম হুমকির মুখে পড়েছে নদীতীরে স্থাপিত বিদ্যুৎ বিভাগের জাতীয় গ্রিড সঞ্চালন লাইনের একটি খুঁটি। গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বেইস ঢালাইয়ের বিশাল অংশ দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। নদীতীরের এই স্থান সংরক্ষণ করা না হলে যে কোনো মুহূর্তে বিপর্যয় ঘটলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন। প্রায় তিনমাস আগে থেকে অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলনের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের এই খুঁটিটি জাতীয় গ্রিড সঞ্চালন লাইনের আওতাভুক্ত বলে জানা গেছে।
সরজমিন দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের জালিয়া পাড়ার পাশে মাতামুহুরী নদীতে শ্যালোমেশিন বসিয়ে প্রতি রাতেই তোলা হয় ভূ–গর্ভের বালু। স্থানীয়রা জানান, এ স্থান থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে দিন দিন ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের জাতীয় গ্রিড সঞ্চালন লাইনের বিশাল খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গেছে। ওই খুঁটির গোড়ার বেইজ ঢালাই বেশ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জালিয়া পাড়ার সচেতন একাধিক ব্যক্তি দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাত দশটার পর থেকে মাতামুহুরী নদীতে শক্তিশালী শ্যালোমেশিন বসানো হয়। রাতভর বালু উত্তোলনের পর ভোরের আলো ফুটতেই নদী থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় শ্যালোমেশিন। এভাবে দুই রাত বালু তোলার পর বিক্রি করা হয়। আর বিক্রি শেষ হলেই ফের নদীতে বসানো হয় শ্যালোমেশিন।
স্থানীয়রা আরও জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের জাতীয় গ্রিড সঞ্চালন লাইনের খুঁটির একেবারে কাছ থেকে বালু উত্তোলন করায় গোড়ার মাটি সরে এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় খুঁটিটি উপড়ে পড়তে পারে।
এ ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড কম্পানি বাংলাদেশ লি. (পিজিসিবি) এর কঙবাজার কার্যালয়ের উপ–সহকারী প্রকৌশলী (এস.ও) নয়ন মজুমদার দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মাতামুহুরী নদীর তীরে স্থাপিত ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের জাতীয় গ্রিড সঞ্চালন লাইনের খুঁটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এজন্য পিজিসিবির একটি দল ওই স্থান পরিদর্শন করবে অচিরেই।’
পাওয়ার গ্রিড কম্পানি বাংলাদেশ লি. (পিজিসিবি) এর কঙবাজার কার্যালয়ের উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) রাজকুমার সাহা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম–কঙবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য স্থাপিত জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের খুঁটির গোড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক। কারণ সঞ্চালন লাইনের এই খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো কঙবাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। জাতীয় গ্রিডের এই খুঁটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।