প্রশিক্ষণের নামে সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ও তার কমিশনের সদস্যসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনার, সচিব ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে কোনো নীতিমালা ছাড়া ভুয়া প্রশিক্ষণ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনের ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচ করে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, বিস্তারিত অনুসন্ধান দল বলতে পারবে। এর বাইরে অন্য কোনো অনিয়ম থাকলে, অনুসন্ধান দল তা বের করে আনবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রশিক্ষণের নামে সরকারের এসব অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বলে যোগ করেন তিনি। এর আগে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কোনো অনুসন্ধান হয়েছে কি না জানতে চাইলে দুদক মহাপরিচালক বলেন, অনুসন্ধানে আরও অনেক বিষয় সামনে আসবে।
গত ২২ জুন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা নূরুল হুদা কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ‘ভুয়া বিলের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগে সাবেক সিইসি নূরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী। তারা তৎকালীন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। এছাড়া ইসির সাবেক দুই সচিব আলমগীর হোসেন ও হেলাল উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তারা। অভিযোগে বলা হয়, প্রশিক্ষণের নামে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা উপেক্ষা করে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে, যা সরকারি
অর্থের অপচয় ও দুর্নীতির শামিল।
বৈষম্যবিরোধী নেতার চাঁদাবাজি: সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে অনুসন্ধানে বাধা নেই, চাঁদাবাজির মামলায় আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সংগঠনটির অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা অনুসন্ধানে কোনো বাধা নেই বলে তুলে ধরেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। সমপ্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব নেতার অনেকে বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন। তাদের দৃশ্যমান সম্পদের পরিমাণও সংবাদে তুলে ধরা হয়েছে। এটি কি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত? এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক মহাপরিচালক বলেন, চাঁদাবাজি সরাসরি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত নয়। তবে কেউ যদি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে থাকেন, সেটি অবশ্যই দুদকের এখতিয়ারভুক্ত। যদি এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে দুদকের পক্ষে অনুসন্ধান করতে কোনো বাধা নেই।
রাজধানীর গুলশানে শনিবার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধীদের নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির নেতা।