চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী মো. মামুন মিয়ার মাথায় অস্ত্রোপচারের পর খুলি খুলে রাখা হয়েছে ফ্রিজে। মাথার ব্যান্ডেজে লেখা আছে ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’, যাতে সবাই সতর্ক থাকে। টানা চার দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়া হয়েছেন। মামুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০–২১ সেশনের শিক্ষার্থী।
বর্তমানে তিনি নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘মামুনের অবস্থা কিছুটা ভালো। তার জ্ঞান ফিরেছে। মাথায় খুলি এখনো জোড়া লাগেনি। ব্রেনের অংশে অপারেশন করায় আপাতত খুলি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এক–দুই মাস পর বা অবস্থার উন্নতির সঙ্গে খুলি আবার লাগানো হবে।’ অপরদিকে গুরুতর আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ইমতিয়াজ মাহমুদ সায়েমের অবস্থাও এখনো আশঙ্কাজনক। আহত হওয়ার চার দিন পার হলেও এখনো তার জ্ঞান ফিরেনি। সায়েমও পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জিয়া উদ্দিন জানান, সায়েমের সাড়া দেওয়ার মাত্রা মঙ্গলবার ৩ থেকে ৫/৬ ছিল। বুধবার পর্যন্ত তা ৮/৯ এ উন্নীত হয়েছে। সাধারণত আমাদের এটি ১৫ থাকে। গতকাল (৩ সেপ্টেম্বর) মেডিক্যাল বোর্ড বসেছিল। এখন আবার অপারেশন করতে হতে পারে।’
এ ছাড়া গুরুতর আহত ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামের অবস্থা চিকিৎসকদের মতে এখনও আশঙ্কাজনক। সংঘর্ষের দিন তাকে পার্কভিউ হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি ও ডান হাতের রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়ায় ১ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নাইমুলের সাথে হাসপাতালে থাকা তার বড় বোন তানজিনা ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাইমুল ইসলাম এখন মোটামুটি সুস্থতার দিকে তবে শঙ্কা এখনও কাটেনি। ডাক্তারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তাকে জীবাণু থেকে নিরাপদে রাখতে হবে যাতে কোনোভাবে ইনফেকশন না হয়। নাইমুল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে অন্তত চার থেকে পাঁচ মাস লাগতে পারে। আর যদি কোনোভাবে নাইমুলের হাতে ইনফেকশন হয় তাহলে সেটা ভালো হতে ছয়–সাত মাসেরও বেশি লাগবে এমনটা জানিয়েছেন নাইমুলের চিকিৎসকেরা।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে এক ছাত্রীর ভাড়া বাসার গেট খোলাকে কেন্দ্র করে দারোয়ানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার পর। ওই রাতে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়ে পরদিনও দফায়–দফায় চলে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপ–উপাচার্য, শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।












