তাকে পানি জাহাঙ্গীর হিসেবে চিনতেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। কিন্তু তিনি নিজেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। দুর্নীতির মাধ্যমে এই জাহাঙ্গীর এক সময় ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে যান বলে অভিযোগ আছে। এ তথ্য শেখ হাসিনা নিজেই ফাঁস করেন। যদিও সেই তথ্য ফাঁসের আগেই পানি জাহাঙ্গীর লাপাত্তা হয়ে যান। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরও তার হদিস মিলছিল না।
জানা গেছে, সেই জাহাঙ্গীরের খোঁজ মিলেছে। দেশে নয়, বিদেশে আছেন তিনি। প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটে দেখা গেছে তাকে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের এ তথ্য জানান। পোস্টে তিনি লিখেছেন, বহুল আলোচিত শেখ হাসিনার পিয়ন জাহাঙ্গীর আলমকে আজ (স্থানীয় সময় বুধবার) নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে বেশ কিছু ডকুমেন্ট পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করাতে অপেক্ষমান দেখা যায়। খবর বাংলানিউজের।
৪০০ কোটি টাকার বেশি লোপাট করে পরিবারসহ আমেরিকা পাড়ি জমানো জাহাঙ্গীর এ সময় কখনো টুপি পরে নিজের মাথাসহ পুরো মুখ ঢাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু গোপন ক্যামেরায় তিনি ঠিকই ধরা পড়ে যান বলে উল্লেখ করেন জুলকারনাইন। অবশ্য প্রকাশিত ছবির এই ব্যক্তিই পানি জাহাঙ্গীর কি না, তা বাংলানিউজ নিজে থেকে নিশ্চিত হতে পারেনি।
ছাত্র–জনতার আন্দোলন তীব্র হওয়ার আগের দিন গত ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে পিএসসির এক গাড়িচালক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলেন তা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা হয়। এর জবাবে শেখ হাসিনা তখন বলেন, আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।
এরপর আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের এই দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে দেশজুড়ে নানা সমালোচনা হতে থাকে। সরকার তখন তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। জব্দ করা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। পরে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম পরিবারসহ আমেরিকায় পালিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী–১ আসন (চাটখিল–সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের এ বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতির পদ বাগিয়ে কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। প্রতারণার মাধ্যমে জাহাঙ্গীর ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি–বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।












