রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা খরচ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফর এবং বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়ার পেছনে অর্থ অপচয় হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন। সরকার পতন ও পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর গেল ছয় মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অর্থ পাচার, দুর্নীতি শতাধিক মামলা হয়েছে। এবার তার বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি পাওয়ার পেছনে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তুলল দুদক। দুদক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক পর্যালোচনা করে কমিশন এসব বিষয় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে গেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ভাড়া করতেন সরকারি টাকায়। নিয়ে যেতেন সফরসঙ্গীদের বিশাল বহর। টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে জাতিসংঘের প্রায় প্রতিটি সাধারণ অধিবেশনে সরকার প্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি। প্রতিবারই নিউইয়র্ক নিয়ে যেতেন বিশাল বহর।
দুদক বলেছে, শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে ২২৭ জনের একটি দল নিয়ে নিউইয়র্কে ৭০তম সাধারণ অধিবেশন এবং টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যান। ২০১৪ সালে ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে এই সংখ্যা ছিল ১৭৮ ও ২০১৩ সালে ছিল ১৩৪। দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে বিমানের বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৮৭ সিরিজের অত্যাধুনিক উড়োজাহাজে যেতেন। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থাটি ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এসব সফরে শেখ হাসিনা ব্যয় করেছেন প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
দুদকের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভুয়া ডক্টরেট সংগ্রহ করেছেন বলেও তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশের সরকারি টাকা লবিস্ট এর পিছনে ব্যয় করে মানদণ্ড ভঙ্গ করে সংগ্রহকৃত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভুয়া ডক্টরেট হল– ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় অব ব্রাসেলস, ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। জানা যায় তিনি যে সকল পদক ও ডিগ্রি সংগ্রহ করেছেন তার প্রায় সবগুলোর পিছনে প্রচুর খরচ বা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি চুক্তির বিনিময়ে বাগিয়ে নিয়েছেন।