হাসিনার গ্রাফিতির পিলার পাচ্ছে ঘৃণাস্তম্ভের স্বীকৃতি

| সোমবার , ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ছবি আন্দোলনের মধ্যে হয়ে উঠেছে ছাত্রদের ঘৃণার প্রতীক, সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দপ্তরের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। পিলার দুটি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে ফেলা নিয়ে সমালোচনার মুখে এমন সিদ্ধান্ত এলো। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে গত রাতেই শিক্ষার্থীরা মুছে ফেলা গ্রাফিতি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এঁকেছেন। এই স্তম্ভটিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতার এই ঘৃণাকে যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে। খবর বিডিনিউজের।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত দুইটি পিলারই ঘৃণাস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করবে।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার ওই ছবি লাল রঙের ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শনিবার রাত ২টার দিকে কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন, প্রক্টরের অনুমতিতেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ সময় একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি, অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে মোছা বন্ধ করেন এবং পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।

ছবি মুছে ফেলার কাজটি নিষ্পাপ সিদ্ধান্ত মন্তব্য করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। ছবি মোছায় দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টোরিয়াল কর্তৃপক্ষ বলছে, জুলাই আন্দোলনে এই দুটি গ্রাফিতি বিপ্লব, প্রতিরোধ এবং ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের প্রতিনিধিত্ব করে। এই স্মৃতিকে তাজা রাখা এবং প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।

ছবি মুছে ফেলার ঘটনা নিয়ে বলা হয়েছে, এটি প্রক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরো সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।

এর মধ্যে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এরপর শিক্ষার্থীরা যেমন চাইবে তেমন করেই স্তম্ভটি পুনরায় তৈরি করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রক্টর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদাবিতে অনড় বেসরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা
পরবর্তী নিবন্ধজুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই : প্রেস সচিব