চলতি বছর চট্টগ্রামে একদিনে রেকর্ড ৩৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া ডেঙ্গুতে ওয়াহিদুর রহমান নয়ন নামের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত বুধবার রাত ১ টা ১০ মিনিটে ভর্তি করা হলে সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে মারা যান নয়ন। এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিন্ড্রোমে বান্দরবানের বাসিন্দা নয়ন মারা যান বলে চিকিৎসকরা মৃত্যু সনদে উল্লেখ করেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। যার অর্ধেকেই চলতি সেপ্টেম্বরে। গতকাল পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬৪ জন। এরমধ্যে নগরীতে ৪৩১ জন এবং বিভিন্ন উপজেলায় ৩৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া চলতি সেপ্টেম্বরে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৬৬ জন।
গতকাল সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৯ জন, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৪ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ জন। এছাড়া আরো ৪ জন নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিভিন্ন জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমছে। বিশেষ করে ফুলের টব ও ডাবের খোসা, গাড়ির টায়ারসহ বিভিন্ন পরিত্যক্ত বস্তুতে পানি জমার কারণে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা প্রজননে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীও বাড়ছে। তাই সবাইকে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখাসহ কোথাও যাতে তিনদিনের বেশি পানি না জমে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এছাড়া রাতে ছাড়াও দিনের বেলায়ও মশারি টানাতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সবগুলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধের মজুদ রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর নগর ও বিভিন্ন উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট ভর্তি হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৭ জন। এরমধ্যে মারা যায় ১০৭ জন। এছাড়া ২০২২ সালে মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৪৪৫ জনের মধ্যে মারা যায় ৪১ জন, ২০২১ সালে আক্রান্ত হয় ২২১ জন এবং মারা যায় ৫ রোগী।
