প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও হালদা নদী সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অংশীজনের উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনারে চট্টগ্রামের লাইফ লাইন খ্যাত এই নদীকে বাঁচাতে সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সম্প্রতি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের (২য় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের অর্থায়নে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় হাটহাজারীর ব্যবস্থাপনায় এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুজন কানুনগো, ডিম সংগ্রহকারী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন সওদাগর, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ।
হালদা নদী রক্ষায় প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সাংবাদিক কেশব কুমার বড়ুয়া, এইচ এম মনসুর আলী, খোরশেদ আলম শিমুল ও বোরহান উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল আজম, মেখল ইউপির চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল আলম, থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হাসান, মোহাম্মদ ইলিয়াস, মো. শফিউল আলম, শহিদুল হক ও আশু বড়ুয়া। প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৬টি মৎস্য হ্যাচারি সম্প্রসারণ ও নির্মাণ, ৬টি হ্যাচারি বিল্ডিং মেরামত ও পুনর্নির্মাণ, ১১শ দরিদ্র জেলের বিকল্প কর্মসংস্থান, ৭টি স্টাডি গবেষণা কেন্দ্র, ২১৮০টি অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারী, সুফলভোগী, এআইজি প্রশিক্ষণ, ৭০ লক্ষ ঘনমিটার পুকুর খনন, হালদা নদীতে অবৈধ মৎস্য শিকার, দূষণ সৃষ্টি প্রতিরোধ এবং মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও প্রচারনা। হালদা নদী বছরে ৪ ধাপে জাতীয় অর্থনীতিতে ৮শ কোটি টাকা যোগান দিয়ে থাকে। মোহরা ও মদুনাঘাট পানি শোধনাগার থেকে মহানগরীতে প্রতিদিন ১৮ কোটি লিটার সুপেয় পানির যোগান দেয়। নদীর গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর এই নদীকে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করেছে। সেমিনারে নদীর অব্যবস্থাপনার মধ্যে নদীর গতিপথ পরিবর্তন, অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ, তীরবর্তী স্থানে ইটভাটা ও কলকারখানা স্থাপন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বর্জ্যের কারণে নদী দূষণসহ নানামুখী অব্যস্থাপনাকে দায়ী করা হয়েছে।