এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র সরকার ঘোষিত বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে পূর্ণিমার এ জোতে মাছের ডিম ছাড়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর প্রভাবকেই এ শংকার কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবছর এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়ে। পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিই ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এসব তিথিতে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণের ফলে নদীতে ঢলের সৃষ্টি হয়ে থাকে। বিশেষ করে নদীর উপরি অংশে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, মানিকছড়ি, চট্টগ্রামের উত্তর ফটিকছড়িতে প্রবল বর্ষণের ফলে নদীর সাথে সংযুক্ত ছড়া ও শাখা খালের মাধ্যমে পাহাড়ি ঢল হালদা নদীতে এসে পড়ে। তখন ঢলের সময় মা মাছ ডিম ছেড়ে থাকে।
এর মধ্যে এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত তিনটি তিথি/জো চলে গেছে। কিন্তু গত তিন জো’র মধ্যে কোন বৃষ্টি হয়নি। ফলে ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। ইতিমধ্যে নদীতে মাছের প্রচুর আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে বলে ডিম আহরনকারীরা জানিয়েছেন। কিন্তু সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় ডিম ছাড়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে পূর্ণিমার জো শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ মে পর্যন্ত জো’র প্রভাব থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে নদীতে ঢল সৃষ্টি হওয়ায় মত বৃষ্টিপাত হলে হয়তো মা মাছ নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। এ ব্যাপারে হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, মাছের একটা ধর্ম রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাছ ডিম ছাড়ে না। বিভিন্ন সময় গবেষণায় এটা প্রমানিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে পূর্ণিমার জোর সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে ডিম ছাড়ার পরিবেশ অনুকূলে থাকলে মা মাছ ডিম ছাড়বে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি হালদা নদীর উৎপত্তিস্থল থেকে কর্ণফুলী নদীর মোহনা পর্যন্ত ১০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ জোয়ার ভাটার নদীতে কার্প জাতীয় মাছ এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে জো র মধ্যে ডিম ছাড়ে। এপ্রিল মাসে ছাড়া ডিম সবচেয়ে ভালো এবং দ্রুত বর্ধনশীল বলে সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেন। কিন্তু এখন মে মাসও শেষের পথে। গতকাল সোমবার বিকালের পর হাটহাজারীর কোন কোন স্থানে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলেও তা নদীতে ঢল হওয়ার মত ছিল না।