প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে পরপর মা মাছ ও ডলফিনের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে পৃথক দুটি কমিটি করা হয়েছে। একটি কমিটি মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে, অপরটি পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের গঠিত কমিটির কর্মকর্তা, হাটহাজারী ও রাউজানের ইউএনও গতকাল সোমবার হালদা নদী ও নদীর সাথে সংযুক্ত শাখা খাল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহে হালদা নদীর বিভিন্ন স্থানে একটি রুই, চারটি কাতলা মা মাছ ও একটি ডলফিন মারা যায়। এই ঘটনায় গঠিত পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন, হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান ও অগ্যজাই মারমা গতকাল হালদা নদীর বিভিন্ন সংযোগ খালের উৎসস্থল ও খাল পরিদর্শন করেন। তারা কুয়াইশ খাল, খন্দকিয়া খাল, কৃষ্ণখালী, কাটাখালী ও বুড়িশ্চরে অবস্থিত খালগুলো পরিদর্শন করে খালের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। পরিদর্শনকারীরা এ বিষয়ে মতবিনিময় করেন। মাছের মৃত্যুর কারণ নিয়ে আলোচনা করেন।
গত রোববার হালদা নদীর আজিমার ঘাটের বাঁকে ১৯ কেজি ৩শ গ্রাম ওজনের একটি কাতলা মাছ মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মাছটির দৈর্ঘ্য ১১৮ সেন্টিমিটার। শুক্রবার নদীর কুমারখালী এলাকায় ১০ কেজি ওজন ও ৫৮ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের একটি কাতলা মাছ এবং একই সময়ে ওই স্থানের সামান্য দূরে ১২ কেজি ওজন ও ৯৮ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের দুটি মৃত কাতলা মাছ পাওয়া যায়। এছাড়া বুধবার রাউজানে উরকিরচর আরবান আলী চৌধুরী ঘাটে একটি মৃত রুই মাছ পাওয়া যায়। তারও কয়েকদিন আগে নদীতে ১২ কেজি ওজনের একটি মৃত কাতলা মাছ পাওয়া যায়। এর আগে একটি ডলফিন মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরপর মাছ ও ডলফিনের মৃত্যুর ঘটনা হালদা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে।
এদিকে জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে করা কমিটির প্রধান করা হয়েছে হাটহাজারী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক মাইদুজ্জামানকে। এছাড়া মৎস্য বিভাগের ৪ কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করতে বলা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ জানান, হালদা নদীকে দূষণমুক্ত রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া নদীতে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা কিংবা ব্যাকটরিয়াল কোনো কারণে শ্বাসরোধ হয়ে মাছ মারা গেছে কিনা তা দেখা হবে।