প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর কয়েকটি পয়েন্টে জাল পেতে সামান্য সংখ্যক ডিমের দেখা পায়। নদীতে মা মাছের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যাপ্ত ঝড় বৃষ্টি ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে মাছ ডিম দিতে পারে।
হাটহাজারী উপজেলা জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম ও রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, আমবশ্যা তিথি চলছে। সোমবার দিবাগত রাতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। অনুকূল পরিবেশ পেলে মা মাছ ডিম দিতে পারে। ডিম সংগ্রহের আশায় নৌকা নিয়ে মৎস্যজীবীরা অপেক্ষায় আছেন।
সোমবার রাতে হালদা নদীর গড়দুয়ারা নয়াহাট, কাটাখালী, পশ্চিম গুজরা, আজিমারঘাট, নাপিতেরঘাট প্রভৃতি স্থানে ডিম সংগ্রহকারীরা নমুনা ডিম পেয়েছেন।
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হালদা নদীতে মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। বজ্রসহ প্রবল বৃষ্টিপাত ও নদীতে ঢলের প্রকোপ দেখা দিলে মা মাছ ডিম ছাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মাছের পেটে পর্যাপ্ত ডিম রয়েছে। পরিবেশ পেলে মাছ ডিম ছেড়ে দিবে। তবে নদীর পানির টারবিডিটি (ঘোলাটে ভাব) এখন ১০০ থেকে ১৫০। ডিম ছাড়ার জন্য প্রয়োজন ৬০০ থেকে ৭০০ ঘোলাটে ভাব।
গত এপ্রিল মাস থেকে আমাবস্যা ও পূর্ণিমার জো থেকে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু নদীতে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় মাছ ডিম ছাড়েনি। একই অবস্থা বজায় থাকায় চলতি মে মাসের পূর্ণিমার তিথিতেও মা মাছ ডিম ছাড়েনি। বর্তমানে আমাবস্যার জো চলমান। বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে নদীতে ঢলের প্রকোপের কারণে পানি ঘোলাটে রূপ ধারণ করে পানি শীতল হলে মা মাছ ডিম ছেড়ে দিতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মাছ ডিম ছাড়তে পারে এই প্রত্যাশায় ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে নমুনা ডিম ছাড়ার পর ডিম সংগ্রহকারীরা গতকাল মঙ্গলবার সকালে জোয়ারের সময় ডিম ছাড়বে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু সকালের জোয়ারের সময়ও ডিম ছাড়েনি মাছ।